গুয়াহাটিঃ ভারতের মুখ্য বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেছেন,সারা দেশের আদালতগুলোতে সহস্ৰাধিক মামলা ৫০ বছর ধরে ঝুলে আছে। দেশের বিভিন্ন আদালতে ২৫ বছর ধরে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ঝুলছে ২ লক্ষের বেশি মামলা। বিশাল সংখ্যক মামলার কোনও সুরাহা না হওয়ায় উদ্বেগ প্ৰকাশ করেন মুখ্য বিচারপতি। রবিবার সকালে গৌহাটি হাইকোর্টের অডিটরিয়ামের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে প্ৰদীপ প্ৰজ্বলনের পর বক্তব্য রাখার সময় একথা বলেন গগৈ। তিনি বলেন,২০ লক্ষের বেশি সিভিল মামলা এবং এক কোটির বেশি ঝুলে থাকা ফৌজদারি মামলার কোনও সমন আজ অবধি পাঠানো হয়নি। আর যদি সমনই পাঠানো না হয় তাহলে আমার বিচারপতিরা বিচারের কাজে শুরু করবেন কিভাবে?
মুখ্য বিচারপতি বলেন,গত ১০ জুলাই তিনি বিভিন্ন হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতিদের উদ্দেশে বিগত ৫০ ও ২৫ বছর আগের মামলাগুলো খতিয়ে দেখতে বলেছিলেন। তিনি জানান অসমে ৫০ বছরের পুরনো কোনও মামলা নেই যদিও তবে ২৫ বছরের পুরনো ১০৬টি মামলা এখনও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ঝুলছে।
দেশের মুখ্য বিচারপতি(সিজেআই)রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা মামলাগুলোর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিষ্পত্তি করার জন্য ব্যবস্থা গ্ৰহণ করতে গৌহাটি হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি(কার্যনির্বাহী)অরূপ কুমার গোস্বামীকে নির্দেশ দেন।
বকেয়া মামলাগুলোর কিনারা করার ক্ষেত্ৰে বিচারপতিদের অপ্ৰতুলতা প্ৰধান কারণ বলে উল্লেখ করে গগৈ পুনরায় উল্লেখ করেন দেশে হাইকোর্টের বিচারপতিদের অবসর গ্ৰহণের সময়সীমা ৬৫ বছর করতে তিনি কেন্দ্ৰীয় সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন। বর্তমানে হাইকোর্টের বিচারপতিদের অবসর গ্ৰহণের বয়স ৬২ বছর। একজন সুদক্ষ বক্তা হিসেবেও গগৈর যথেষ্ট খ্যাতি রয়েছে। তিনি বলেন,বর্তমান সময়ে কিছু ব্যক্তি বিশেষ ও গোষ্ঠীর বিতর্কিত ও বেপোয়া আচরণ লক্ষ্য করা গেছে। বিচার বিভাগের সেই সব শক্তিকে পরাভূত করতে হবে। তিনি বলেন,বিচারপতি ও বিচার বিভাগীয় আধিকারিকদের জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনের কথা স্মরণে রাখা উচিত। এর ওপরই আমাদের বিচার বিভাগীয় প্ৰতিষ্ঠানের টিকে থাকা নির্ভর করছে। তাই সঠিক বিচার ও রায়দানের ওপর বিচার বিভাগের মর্যাদা নির্ভর করছে-বলেন গগৈ। তিনি আরও বলেন,আদালতে মামলার স্তূপ জমে যাওয়ায় বিচার বিভাগকে প্ৰায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হবে। তবে এর জন্য বিচার বিভাগ একা দায়ী নয়,প্ৰশাসনেরও অনেক কিছু করণীয় রয়েছে।
মুখ্য বিচারপতি গগৈ তাঁর আইনি জীবন শুরু করেন গৌহাটি হাইকোর্টে। রবিবার এই হাইকোর্টে অডিটরিয়ামের শিলান্যাস করেন তিনি। এদিন গৌহাটি হাইকোর্টে থাকাকালে পুরনো দিনের কথাও স্মরণ করেন গগৈ। ‘সেদিনের সব কিছুই তাঁর মনের মণিকোঠায় আজও জেগে আছে’।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ সিজেআই রঞ্জন গগৈকে ক্লিন চিট দিল সুপ্ৰিমকোর্টের তিন বিচারপতির প্যানেল