গুয়াহাটিঃ অসমের গ্ৰামাঞ্চলগুলোতে মাত্ৰ ৫৬ জন দন্ত চিকিৎসক রয়েছেন। অথচ রাজ্যের গ্ৰামাঞ্চলগুলোতে ৩৫৪ জন দন্ত চিকিৎসকের প্ৰয়োজন। তাছাড়া রাজ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কম রয়েছে ৫৭২ জন। এর মধ্যে ১৭১ জন সার্জন,৯৫ জন অবস্ট্ৰেটিশিয়ান এবং গাইনকোলগিস্ট,১৭১ জন ফিজিওলজিস্ট এবং ১৩৫ পেডিয়াট্ৰিশিয়ানস কম রয়েছেন। রেডিওগ্ৰাফারস কম রয়েছেন ৮৭ জন।
রাজ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের এই অপ্ৰতুলতা সম্পর্কে সম্প্ৰতি কেন্দ্ৰীয় স্বাস্থ্য মন্ত্ৰকের এক রিপোর্টে একথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্ৰত্যন্ত গ্ৰামাঞ্চল সহ রাজ্যে স্বাস্থ্য রক্ষায় উন্নত সু্যোগ সুবিধা ও পরিকাঠামো গড়ে তোলার দিশপুর যে বড়বড় দাবি করেছে কেন্দ্ৰীয় স্বাস্থ্য মন্ত্ৰক তা অসার প্ৰতিপন্ন করেছে ওই রিপোর্টে।
গ্ৰামীণ স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান(২০১৮-১৯)সম্পর্কে রিপোর্টে অসমের গ্ৰামাঞ্চলগুলোতে স্বাস্থ্য কেন্দ্ৰ এবং হাসপাতাল বিল্ডিং নির্মাণের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষেত্ৰে ইতিবাচক কিছু পদক্ষেপ গ্ৰহণের প্ৰতি আলোকপাত করা হলেও বলা হয়েছে অনেক ডাক্তার,নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্য কেন্দ্ৰের কর্মীরা গ্ৰামাঞ্চলের মানুষের সেবায় ব্ৰতী হতে তেমন একটা আগ্ৰহ দেখান না। অসম সরকার ১৪১২টি স্বাস্থ্য উপকেন্দ্ৰ এবং ৩৩৬টি প্ৰাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্ৰের বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। এগুলোতে ৫৪৯ জন অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসক এবং ৫,৭৮৩ জন সহযোগী নার্সিং মিডওয়াইফ(এএন এম)নিয়োগ করেছে ২০০৫ থেকে ২০১৯-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত। তবে সূত্ৰটি বলেছে,রাজ্যের অধিকাংশ চিকিৎসকই গ্ৰামাঞ্চলে পোস্টিং নিতে অস্বীকার করে থাকেন এবং কেউ কেউ আবার গ্ৰামাঞ্চলে কাজে যোগ দেবার কিছুদিন পর স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে বসেন। রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে গ্ৰামীণ অসমে ৬,৩৭৪টি সাব সেন্টার এবং এইচডব্লিউসি-এসসি থাকা প্ৰয়োজন। কিন্তু ১,৭৩১ টি কম স্বাস্থ্য কেন্দ্ৰ দিয়েই কাজ চালানো হচ্ছে,যা মোট সংখ্যার মাত্ৰ ২৭ শতাংশ। রিপোর্টে বলা হয়েছে রাজ্যের গ্ৰামাঞ্চলে ৪৬৪৩ জন পুরুষ স্বাস্থ্য কর্মী থাকা প্ৰয়োজন। বর্তমানে পুরুষ স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছেন ৩০৮০ জন। কিন্তু রাজ্যে মহিলা স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে
প্ৰয়োজনের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। বর্তমানে অসমের স্বাস্থ্য কেন্দ্ৰগুলোতে ৯০১০ জন মহিলা স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োজিত রয়েছে। অথচ এক্ষেত্ৰে চাহিদা হচ্ছে ৪,৬৪৩ জনের। বাড়তি মহিলা স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগের প্ৰশ্নটি নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোনও জবাব দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে,রাজ্যে ৬৯৮টি প্ৰাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্ৰের মধ্যে মাত্ৰ ৪৪.৪ শতাংশ ২৪*৭ ভিত্তিতে চলছে। এর মধ্যে ৭৯.৭ শতাংশে লেবার রুম রয়েছে,মাত্ৰ ৬ শতাংশে রয়েছে অপারেশন থিয়েটার এবং ৩৮.৩ শতাংশো আছে মাত্ৰ চারটি বিছানা।
কেন্দ্ৰীয় স্বাস্থ্য মন্ত্ৰকের ওই রিপোর্ট সম্পর্কে গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের একজন অবসরপ্ৰাপ্ত চিকিৎসক বলেন,‘সরকার সাম্প্ৰতিক বছরগুলো হাসপাতাল বিল্ডিং,স্বাস্থ্য কেন্দ্ৰ নির্মাণ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম ইত্যাদি ক্ৰয়ে দেদার টাকা ঢালছে। শুধু বাড়ি নির্মাণ ও সরঞ্জাম কিনলেই সবার জন্য উন্নত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যাবে না। পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক,নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীর প্ৰ্ৰয়োজন যারা গ্ৰামাঞ্চলেও কাজ করতে প্ৰস্তুত। এমনটা না হলে গ্ৰামবাসীরা রোগীর উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা আশাই করতে পারবেন না’।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্ৰতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করে তুলেছে অসম
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: AASU takes out torch rally against CAA 2019 in Guwahati