নয়াদিল্লিঃ শহিদের চার বছরের একটি ছেলেকে কোলে তুলে নিয়েছেন একজন পুলিশ অফিসার। এই দৃশ্য দেখে চোখের জল আটকানো সম্ভবত সবার পক্ষে সম্ভব নয়। যে পুলিশ কর্তা ওই দুধের শিশুকে কোলে তুলে নিয়েছেন তিনিও কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কারণ,চার বছরের এই শিশুটি ইন্সপেক্টর আর্শাদ খানের ছেলে,যিনি গত রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগে সন্ত্ৰাসী আক্ৰমণের শিকার হন।
ছবিতে,হতভাগ্য শিশুটিকে কোলে তুলে নেওয়া যে বরিষ্ঠ পুলিশ কর্তাকে দেখা যাচ্ছে তিনি শ্ৰীনগরের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ(এসএসপি)হাসিব মুঘল। শহিদ হওয়া পিতার কফিনের কাছ থেকে অবুঝ শিশুটিকে সরিয়ে নেওয়ার সময় এই পুলিশ অফিসারকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। এই হৃদয় বিদারক দৃশ্য বর্ণনা করার কোনও ভাষা নেই। পুলিশ অফিসারকে এভাবে কাঁদতে দেখে অন্যরাও ডুকরে ডুকরে কাঁদতে শুরু করেন।
উবান নামের চার বছরের ওই শিশুটি তার বাবা আর্শাদ খানকে চিরদিনের জন্য হারিয়েছে। রবিবার অনন্তনাগে নরপিশাচ সন্ত্ৰাসীরা টহলরত সিআরপিএফ বাহিনীর ওপর আঘাত হানে। সন্ত্ৰাসীদের ওই আক্ৰমণ পাঁচ সেনা জওয়ানের জীবন অকালে কেড়ে নেয়। আর্শাদ খান সন্ত্ৰাসী আক্ৰমণে গুরুতর আহত হন। দিল্লির এইমসে আর্শাদ খানের চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো না। রবিবার তাঁর মৃত্যু হয়।
কিন্তু অবুঝ শিশুটি বাবার নিথর দেহ কফিনে শায়িত দেখে কিছুই বুঝে উঠতে পারেনি। অতটা বোঝার বয়েস তার হয়নি। পুলিশ অফিসারের কোলে চেপে সে বাড়িতে চলে আসে। তবে ফেরার পথে কোলেও থেকেও বার বার ওই কফিনের দিকে ফিরে তাকাচ্ছিল। কেন অন্যান্য পুলিশ অফিসাররা তার বাবাকে এমন সম্মান দেখাচ্ছেন তার কিছুই ঠাহর করতে পারেনি সে। আর্শাদ খান যে এখন এখন থেকে একজন শহিদ হিসেবে দেশবাসীর মনে বেঁচে থাকবেন ছোট্ট শিশু উবানের সেটুকু বোধও হয়নি। পিতাকে অকালে হারিয়ে খুদে শিশুটি আজ নিঃস্ব। যে পুলিশ অফিসার তাকে স্বস্নেহে কোলে তুলে নিয়েছেন তিনি নিজেই এই শোক সামলে উঠতে পারছিলেন না। নীরব নিস্তব্ধ একটা পরিস্থিতিতে এই পুলিশ কর্তার চোখের কোনও জলে ভিজে যায়।
সদ্য পিতৃ হারানো এই খুদে শিশুকে একজন পুলিশ অফিসারের কোলে তুলে নেওয়ার এই দৃশ্যটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্ৰকাশ করা হয়। এই হৃদয় বিদারক দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মনও ভারাক্ৰান্ত করে তুলেছে।
এদিকে খবর পাওয়া গেছে যে,দুই সন্ত্ৰাসী সিআরপিএফ বাহিনীর ওপর আক্ৰমণ চালিয়েছিল নিরাপত্তা রক্ষীরা তাদের একজনকে হত্যা করেছে। শহিদ সৈনিক খান অনন্তনাগ শহরের সদর থানা স্টেশন হাউসে অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। খান রেখে গেছেন স্ত্ৰী,দুই পুত্ৰ,অভিভাবক ও ছোট ভাইকে। শ্ৰীনগর শহরের বাসিন্দা খান ২০০২ সালে রাজ্য পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ ঝাড়খণ্ডে নকশালদের বিস্ফোরণে অসমের ৩ কোবরা জওয়ান সহ আহত ১৫