রাজ্যের খবর

নামবর অভয়ারণ্যে নির্মাণ কাজ বন্যপ্ৰাণীর ক্ষেত্ৰে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে

Sentinel Digital Desk

গোলাঘাটঃ নির্মাণ সংক্ৰান্ত কার্যকলাপ নামবর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বন্যপ্ৰাণীদের ক্ষেত্ৰে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভয়ারণ্যের প্ৰাণী ও পরিবেশ রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা হয়েছে বলে বন বিভাগের তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে। ওদিকে সুপ্ৰিমকোর্ট অভয়ারণ্যের পরিবেশ স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তার পরেও কিছু লোক অভয়ারণ্যের ওই সব নিষিদ্ধ এলাকায় নির্মাণ কাজ চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

গোলাঘাট জেলা সদর থেকে নামবর অভয়ারণ্যের দূরত্ব প্ৰায় ১২ কিলোমিটার। অবাঞ্ছিত কিছু ব্যবসায়ী বন আইনের সমস্ত নিয়ম নীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নামবর সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অবৈধ নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছে।

নামবর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পরিবেশ-স্পর্শকাতর জোনে দুটো চা ফ্যাক্টরি রয়েছে। এই চা ফ্যাক্টরিগুলো উঁচু সীমানা প্ৰাচীর নির্মাণ করছে এবং এই প্ৰাচীরে ধারালো ব্লেডও লাগানো হয়েছে। ওই এলাকাটি আসলে হাতির করিডর। এরফলে বন্যপ্ৰাণীরা বিকল্প রাস্তা খুঁজতে বাধ্য হচ্ছে,যার দরুন নিকটবর্তী এলাকাগুলোতে হাতি মানুষের সংঘাত দিনদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নিষিদ্ধ এলাকায় এধরনের নির্মাণ কাজের বন্য প্ৰাণীরা চলাচলের ক্ষেত্ৰে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে এবং তাদের আচরণেও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এদিকে গোদের ওপর বিষফোড়ার মতো চা ফ্যাক্টরিগুলো নির্মাণ কাজ চালানোয় তা বন্য জীবজন্তুর ওপর বিপদজনক প্ৰভাব ফেলছে। বিভিন্ন সংগঠন এবং সচেতন নাগরিকরা নামবর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাছে এধরনের নির্মাণ কাজের বিরোধিতা করেছেন। অভয়ারণ্যের পরিবেশ-স্পর্শকাতর এলাকায় এধরনের নির্মাণ কাজ চলতে দেখেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো পর্যন্ত কোনও ধরনের পদক্ষেপ গ্ৰহণ করেনি। ২০১৬ সালে গোলাঘাট ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসের রেঞ্জ অফিসার নামবর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাছে মুরফুলনি তিনি এলাকায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে একটি নির্দেশ(নং এফ/ইএসজেড/২০১৬/১৪৫৬-৫৭ তাং ১১-১১-২০১৬ জারি করেছিলেন।

নির্দেশে রেঞ্জ অফিসার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে ওই এলাকায় কোনও ধরনের নির্মাণ কাজ করা যাবে না। কিন্তু তার পরেও লোহিত টি কোম্পানি প্ৰাইভেট লিমিটেড সব নীতি নিয়ম অবজ্ঞা করে বনাঞ্চলের নিষিদ্ধ এলাকায় নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

‘উল্লেখ্য,ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন স্ট্ৰ্যাটিজি ২০০২-এর ৯ নম্বর ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে যে রাষ্ট্ৰীয় উদ্যান বা অভয়ারণ্যের সীমার এক কিলোমিটারের মধ্যে পড়া জমিগুলো ইকো- ফ্ৰেগাইল জোন হিসেবে চিহ্নিত। এই সব ইকো-সেনসেটিভ এলাকায় যেকোনও ধরনের নির্মাণ কাজ নিষিদ্ধ।

চা কোম্পানির দুটো নির্মাণ কাজ নামবর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের হাতিদের চলাচল প্ৰচণ্ড ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। এরফলে নিকটবর্তী গ্ৰামাঞ্চলগুলিতে হাতি-মানুষের সংঘাতও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গোলাঘাট জেলার বিভিন্ন স্থানে সম্প্ৰতি তিনটি হাতির শব উদ্ধার হয়েছে। সীমানা প্ৰাচীরে সংযুক্ত ধারালো ব্লেডে আহত হয়ে বিষক্ৰিয়ায় হাতিগুলোর মৃত্যু হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বন্য জীবনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও পশুপ্ৰেমীরা হাতির চলাচলের পথ সুরক্ষিত করতে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্ৰহণের জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন।