রাজ্যের খবর

অসমে ফের এনআরসি নবায়নের বিরোধী নেতা দেবব্ৰত শইকিয়া

Sentinel Digital Desk

গুয়াহাটিঃ স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী অমিত শাহ বুধবার রাজ্যসভায় ঘোষণা করেছেন সারা দেশের সঙ্গে অসমেও ফের রাষ্ট্ৰীয় নাগরিক পঞ্জি(এনআরসি)নবায়ন করা হবে। স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰীর এই সিদ্ধান্তে প্ৰতিক্ৰিয়া ব্যক্ত করে রাজ্যের বিরোধী নেতা দেবব্ৰত শইকিয়া বলেন,রাজ্যে চূড়ান্ত এনআরসি প্ৰকাশের তিন মাস এখনও কাটেনি। সুপ্ৰিম কোর্টের তত্ত্বাবধানেই রাজ্যে এনআরসি নবায়ন করা হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটাই যে,শীর্ষ আদালত চূড়ান্ত এনআরসির বৈধতা মেনে নিয়েছিল। কিন্তু শাহ অসমে নতুন করে এনআরসি নবায়নের কথা ঘোষণা করায় এই ইঙ্গিতই দিচ্ছে যে সুপ্ৰিম কোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে কেন্দ্ৰীয় সরকার রাজি নয়-বলেন তিনি।

‘অসমে এনআরসি নবায়নের কাজে ৫০ হাজার সরকারি কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল এবং কর দাতাদের দেওয়া ১২০০ কোটিরও বেশি টাকা খরচ হয়েছিল। অসমের ৩.২৯ কোটি বাসিন্দাকে এনআরসি প্ৰক্ৰিয়ায় অংশগ্ৰহণের জন্য নথিপত্ৰ সংগ্ৰহ করতে প্ৰচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। কিছু লোক তো নিজেদের পশুধন এবং এমনকি সম্পত্তি বিক্ৰি করেছেন নিজেদের নাগরিকত্ব প্ৰমাণের জন্য। চূড়ান্ত পর্যায়ের এনআরসির শুনানিতে অংশ নেওয়ার জন্য কেউ কেউ ৬০০ কিলোমিটার দূরে যেতেও বাধ্য হয়েছেন। এই কর্মযজ্ঞ চলাকালে কয়েকজন ব্যক্তিকে প্ৰাণও হারাতে হয়েছে। শইকিয়া বলেন,কেন্দ্ৰ দেশের সঙ্গে রাজ্যে নতুন করে এনআরসি নবায়ন করতে চাওয়ার পিছনে একটা গৃঢ় উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তাঁর মতে,প্ৰথমত কেন্দ্ৰ সরকার চাইছে,সুপ্ৰিম কোর্টের কোনওরকম তদারকি ছাড়া এনআরসি নবায়ন করতে। এমনটা হলে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্ৰদায়ের বেশকিছু প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিকের নাম ছেঁটে দেওয়া এবং ভাষিক সংখ্যালঘু সম্প্ৰদায়ের একাংশ অবৈধ অনুপ্ৰবেশকারীর নাম এনআরসিতে অন্তর্ভুক্ত করা সহজ হবে। দ্বিতীয়ত,বিজেপি ধর্মীয় লাইনে এনআরসিকে মেরুকরণ করার চেষ্টা করছে-অভি্যোগ করেন তিনি।

‘আমি সুপ্ৰিম কোর্টকে এই আবেদন জানাতে চাই যে তারা যেন অসমে ফের এনআরসি নবায়নে কেন্দ্ৰীয় সরকারকে অনুমতি না দেন। কেন না,একটা দীর্ঘ প্ৰক্ৰিয়ার পর অসমে এনআরসি নবায়নের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। শইকিয়া আরও বলেন,রাজ্যে ফের এনআরসি নবায়ন হলে তিন কোটির বেশি মানুষকে নাগরিকত্ব প্ৰমাণের নামে আবার হয়রানির মুখে পড়তে হবে। দীর্ঘ ছয় বছর ধরে রাজ্যের ৫০ হাজারের বেশি সরকারি কর্মী এনআরসি-র কাজে ব্যস্ত থাকায় রাজ্যে উন্নয়নের কাজ যে ব্যাঘাত ঘটেছে সুপ্ৰিম কোর্টের সেই বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। এধরনের আরও একটা পর্যায় অসম ও রাজ্যের মানুষের পক্ষে বহন করা সম্ভব হবে না। ‘আমি সারা অসম ছাত্ৰ সংস্থাকে(আসু)কেন্দ্ৰীয় সরকারের সাম্প্ৰতিক এই সিদ্ধান্তের জোর বিরোধিতা করার আর্জি জানাচ্ছি’।

১৯৮৫ সালে স্বাক্ষরিত অসম চুক্তির ভিত্তিতে ১৯৭১ সালকে ভিত্তি বছর ধরে রাজ্যে এনআরসি নবায়ন করা হয়েছে। আসুই অসম চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিল। তাই অসম চুক্তির মূল শর্তগুলিতে কেন্দ্ৰ যদি গুরুত্ব না দেয় তাহলে ছয় বছরের অসম আন্দোলন ও ৮৫৫ জন শহিদের আত্মত্যাগ অর্থহীন হয়ে পড়বে-বলেন শইকিয়া।

অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Govt all set to push for the contentious Citizenship Bill in the winter session of Parliament