ভারতের প্ৰাক্তন মুখ্য বিচারপতি(সিজেআই)রঞ্জন গগৈ আজ রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে শপথ নিয়েছেন। গগৈর রাজ্যসভায় শপথ গ্ৰহণের প্ৰতিবাদে কংগ্ৰেসের নেতৃত্বে বিরোধীরা আজ রাজ্যসভায় ওয়াকআউট করে। কংগ্ৰেস সদস্যরা ‘শেম শেম’ বলে আওয়াজ তুলে হল থেকে বেরিয়ে যান। কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া,ডিএমকে এবং এমডিএমকে এই প্ৰতিবাদে শামিল হয়। বিচার বিভাগের বেশকিছু বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব গগৈর এই নিয়োগ নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন। মদন লুকুর,একে পাটনায়েক এবং কুরিয়ান যোসেফ এই নিয়োগের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। কংগ্ৰেস নেতা কপিল সিবাল অভিযোগ করেন গগৈর রাজ্যসভা আসন গ্ৰহণ করাটা তোষামোদের শামিল। অনেকে আবার বলেছেন,এই নিয়োগ বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে কলঙ্কিত করেছে।
রাজ্যসভার আসন কেন তিনি গ্ৰহণ করলেন সাংবাদিকরা এই প্ৰশ্ন করলে গগৈ বলেন,পরে তিনি এবিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন। ‘আমাকে আগে শপথ নিতে দিন। তারপরই আমি প্ৰচার মাধ্যমকে খুলে বলবো কেন আমি এই পদ গ্ৰহণ করেছি’-মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে সাংবাদিকদের একথা বলেছেন গগৈ।
‘আমি এই পদ এজন্যই মেনে নিয়েছি যে, আমার একটা বলিষ্ঠ ধারণা রয়েছে দেশ গড়ার জন্য কিছুক্ষেত্ৰে আইনসভা ও বিচার বিভাগ একসঙ্গে কাজ করতে পারে। সংসদে আমার উপস্থিতি আইনসভা এবং অন্যান্যদের সামনে বিচার বিভাগের মতামত তুলে ধরায় একটা সু্যোগ এনে দেবে’-বলেন গগৈ।
সুপ্ৰিম কোর্টের একজন মহিলা কর্মী প্ৰাক্তন সিজেআই গগৈর বিরুদ্ধে যৌথ নির্যাতনের অভিযোগ এনেছিলেন। ওই মহিলাটি গগৈর বাড়িতে জুনিয়র অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে কাজ করেছিলেন। এই অভিযোগ নিয়ে শীর্ষ আদালত একটি জরুরি শুনানির ব্যবস্থা করে। গগৈ অবশ্য ওই অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন প্ৰাক্তন মহিলা কর্মী বিচার ব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছেন। তাছাড়া মহিলাটির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ ছাড়াও দুটি এফআইআরও রয়েছে। সুপ্ৰিম কোর্টের তিন সদস্যের প্যানেল পুরো বিষয়টির তদন্ত করে ওই মহিলার অভিযোগের কোনও সত্যতা খুঁজে পায়নি। ফলে গগৈর বিরুদ্ধে আনা মহিলার ওই অভি্যোগ ধোপে টেকেনি।
এদিকে প্ৰাক্তন মুখ্য বিচারপতি(সিজেআই)রঞ্জন গগৈ রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে শপথ নেবার একদিন আগে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ সোশিয়েল সায়েন্স রিসার্চ-এর একজন প্ৰফেসর,মধু কিশওয়ার রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে গগৈর মনোনয়নের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বুধবার সুপ্ৰিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ সম্পর্কিত(পিআইএল)দাখিল করেছেন। ‘প্ৰাক্তন সিজেআই-র রাজ্যসভায় মনোনয়নের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ওই পিআইএল-এ বলা হয়েছে,এখনও ধাক্কা সামলে না ওঠা মোদি সরকার এধরনের আরও একটা ভুল করে বসলো’-কিশওয়ার পরে এক টুইটে বলেছেন একথা। ২০ পৃষ্ঠায় ওই পিআইএলটি স্বতন্ত্ৰ ক্ষমতায় দাখিল করা হয়। এটি দাখিলে কোনও আইনজীবীর সাহায্য নেওয়া হয়নি।
কিশওয়ার তাঁর পিআইএলে দাবি করেছেন যে রাষ্ট্ৰপতি রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে গগৈকে যে মনোনয়ন দিয়েছেন সেটা একটা রাজনৈতিক নিয়োগের মতো। ‘গগৈ সিজেআই থাকাকালে বেশকটি মামলার ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিলেন। এধরনের নিয়োগ দেশের বিচার ব্যবস্থার বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর সন্দেহের কালো ছায়া ফেলবে’-পিআইএল-এ উল্লেখ করেছেন তিনি। কিশওয়ার তার পিআইএলে এই বিষয়টির ওপরও আলোকপাত করেছেন গগৈ সিজেআই থাকাকালে বলেছিলেন যে অবসরগ্ৰহণের পর নিয়োগ বিচার বিভাগের স্বাধীনতার ক্ষেত্ৰে কালিমা লেপন করবে। কিশওয়ার গগৈর রাজ্যসভা পদে মনোনয়ন স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়েছেন ওই পিআইএলে।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ করোনা ভাইরাসঃ কেরলের হোটেলে কোয়ারেন্টাইন থেকে ফেরার অসমের এক ব্যক্তি
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: KMSS leader Akhil Gogoi granted bail as NIA fails to submit charge-sheet