সংবাদ শিরোনাম

রাজ্যে বন্যা,ধসে ৩ জনের মৃত্যু,ক্ষতিগ্ৰস্ত দুই লক্ষের বেশি

Sentinel Digital Desk

গুয়াহাটিঃ বন্যা ও ভূমিস্খলনে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে তিনজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গোটা রাজ্যে বন্যায় আক্ৰান্ত ও ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়েছেন ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ। বুধবার সরকারি সূত্ৰে এখবর জানানো হয়। গোলাঘাট জেলার বোকাখাত রাজস্ব সার্কলে বন্যায় মৃত্যু হয়েছে একজনের। ধেমাজি রাজস্ব সার্কলে আরও একজনের প্ৰাণ কেড়ে নিয়েছে বন্যা। কামরূপ জেলার দিশপুর রাজস্ব সার্কলে ভূমি ধসে প্ৰাণ হারিয়েছেন একজন ব্যক্তি।

রাজস্ব ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ বন্যাপীড়িত মানুষের সাহায্যে স্টেট ডিজেস্টার রেসপন্স ফান্ড(এসডিআরএফ)থেকে ২১.০৩ কোটি টাকা রিলিজ করেছে। গ্ৰ্যাচুইটি রিলিফ(জিআর)-এর উদ্দেশ্যে আরও ৪.৫০ কোটি টাকা খুব শিগগিরই রিলিজ করা হবে।

বন্যাপীড়িতদের জন্য মাজুলি জেলা সর্বোচ্চ ৩.৫০ কোটি টাকা পেয়েছে। মরিগাঁও জেলা পেয়েছে ২.৬০ কোটি টাকা।

এদিকে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি বর্তমানে আরও খারাপের দিকে মোড় নিয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে,অসম,অরুণাচল প্ৰদেশ,মণিপুর,মিজোরাম ও নাগাল্যান্ডে আগামি চারদিন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বৃষ্টিপাত মাত্ৰাতিরিক্ত হলে বন্যা পরিস্থিতি যে শোচনীয় আকার নেবে তা বলা বাহুল্য। অসম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের(এএসডিএমএ)আধিকারিকরা বলেছেন,ধেমাজি,লখিমপুর,বিশ্বনাথ,দরং,বরপেটা,নলবাড়ি,চিরাং,মাজুলি,গোলাঘাট,যোরহাট ও ডিব্ৰুগড় জেলায় মোট ৫৩০টি গ্ৰাম বন্যার জলে ভাসছে। এই জেলাগুলিতে ক্ষতিগ্ৰস্ত মানুষের সংখ্যা ২ লক্ষ ছাপিয়ে গেছে। চলতি বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্ৰস্ত জেলা দুটি হলো-ধেমাজি ও লখিমপুর।

গত ৪৮ ঘণ্টা থেকে অসম এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যে টানা বৃষ্টি হচ্ছে।

লখিমপুর জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও শোচনীয় রূপ নিয়েছে। রঙানদী জল বিদ্যুৎ প্ৰকল্প(আরএইচইপি)গত সোমবার থেকে রঙানদী বাঁধের বাড়তি জল ছেড়েই চলেছে। রঙানদীর কূল ছাপানো জলে উত্তর লখিমপুর ও নাওবৈসা রাজস্ব সার্কলের ডাউন স্ট্ৰিমে নতুন নতুন এলাকা ডুবিয়ে দিয়েছে। বুধবার থেকে এই অঞ্চলগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবাতির দিকে মোড় নেয়।

রঙানদী বাঁধের জলাধার থেকে নতুন করে বাড়তি জল ছাড়ায় উল্লিখিত রাজস্ব সার্কলের ৫০টির বেশি গ্ৰাম বন্যার জলে ডুবে যায়। রাজ্য দুর্যোগ প্ৰশমন বাহিনী(এসডিআরএফ)এবং ন্যাশনাল ডিজেস্টার রেসপন্স ফোর্স(এনডিআরএফ)উদ্ধার এবং দুর্গতদের নিরাপদ আস্তানায় সরিয়ে নেওয়ার কাজ চালাচ্ছে। ক্ষতিগ্ৰস্তদের মধ্যে ত্ৰাণ সাহা্য্যও বিতরণ করছে তারা।

রাজ্যে প্ৰধান নদীগুলো বিশেষ করে ব্ৰহ্মপুত্ৰ,দিখৌ,ধনশিরি,জিয়াভরলি,পুঠিমারি এবং বেকি বিপদ সঙ্কেতের উপর দিয়ে বইছে।

ব্ৰহ্মপুত্ৰের কূল ছাপানো জল কাজিরঙা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের কিছু অংশে ঢুকে পড়েছে। উদ্যানে জল ঢোকার জন্য জীবজন্তুগুলো উঁচু জমিতে আশ্ৰয় নিতে বাধ্য হচ্ছে। বন্যার জল উদ্যানে ঢুকলেও পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্ৰণে রয়েছে বলে জানা গেছে। ‘আমরা পরিস্থিতির দিকে ঘনঘন নজর রাখছি এবং ২৭নং রাষ্ট্ৰীয় সড়ক দিয়ে গাড়ির গতিবেগ নিয়ন্ত্ৰণেও প্ৰয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে’-জানান কাজিরঙার ডিভিশনাল বন আধিকারিক রোহিণী বল্লভ শইকিয়া।

বন্যায় মোট ১৩,২৭৬ হেক্টর কৃষি জমির ক্ষতি হয়েছে বলে জানান একজন সরকারি কর্মকর্তা। গুয়াহাটি ও উত্তর গুয়াহাটির মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে ফেরি সেবা বন্ধ রাখা হয়েছে,ব্ৰহ্মপুত্ৰ ফুলে ফেঁপে ওঠায়।