গুয়াহাটিঃ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন(ক্যা)২০১৯-এর বিরুদ্ধে রাজ্যে যখন গণ আন্দোলনের জোয়ার চলছে সে সময় উজান অসমের বিজেপি বিধায়কদের একটা গোষ্ঠী রীতিমতো শঙ্কিত বোধ করছেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন(ক্যা)অসমিয়া ভাষা,সাহিত্য,সংস্কৃতি ও জমির অধিকার খর্ব করবে বলে অসমিয়া নাবুষের মধ্যে যে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে তা প্ৰশমনের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে বিধায়করা বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনোয়ালকে অনুরোধ করেছেন। সংশোধিত ওই আইন নিয়ে নিজেদের ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টির কথাও মুখ্যমন্ত্ৰীর কাছে ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার এখানে এক বৈঠকে বিজেপি বিধায়করা মুখ্যমন্ত্ৰীকে বলেছেন অসমিয়া জাতিকে কিভাবে সুরক্ষিত করা হবে মুখ্যমন্ত্ৰী যেন প্ৰকাশ্যে এসে তার ব্যবস্থা করেন। ভাষা,সাহিত্য,সংস্কৃতি ও জমির অধিকার রক্ষা করার ব্যাপারে অসমিয়াদের আশ্বস্ত করার জন্য মুখ্যমন্ত্ৰীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
বিধায়করা সোনোয়ালকে আরও বলেছেন,অসম চুক্তির ৬নং দফাকে আইনে রূপান্তরিত করে অসমিয়া জাতির সুরক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে। তাই অসম চুক্তির ৬নং দফা দ্ৰুত রূপায়িত করে অসমিয়াকে চিরকালের জন্য রাজ্যভাষা করার আর্জি জানিয়েছেন বিজেপির ওই সব বিধায়করা। মুখ্যমন্ত্ৰী সোনোয়ালের সঙ্গে বৈঠকের সময় বিধায়ক পদ্ম হাজরিকা বলেন,নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন(ক্যা)বাস্তবে রূপান্তরিত হলে জমি,ভাষা,সাহিত্য,সংস্কৃতি সবকিছুই খোয়াতে হবে বলে অসমিয়া মানুষের মনে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি দিনদিনই খারাপের দিকে মোড় নিচ্ছে। সিএএ রূপায়িত হলে অসমিয়া ভাষা রাজ্যভাষা হিসেবে থাকবে না এমন আশঙ্কাও মানুষের মনে দেখা দিয়েছে বলে হাজরিকা উল্লেখ করেছেন। তাই এই মুহূর্তে অসমিয়াকে চিরকালের জন্য রাজ্যভাষা করতে ক্যাবিনেটে সিদ্ধান্ত নেওয়া প্ৰয়োজন বলে হাজরিকা মুখ্যমন্ত্ৰীকে বলেন। তিনি অসম চুক্তির ৬নং দফা অবিলম্বে রূপায়ণ করে অসমিয়া মানুষের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার আর্জি জানান। অসম চুক্তির ৬নং দফা নিয়ে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটির জেলা পর্যায়ে মতামত শুনে শীঘ্ৰ তাদের রিপোর্ট পেশ করা উচিত।
এছাড়াও ‘অসম চুক্তির ৭নং দফার অধীনে রাজ্যের সর্বাঙ্গীণ উন্নয়নে কেন্দ্ৰীয় প্যাকেজ চাওয়া উচিত যাতে করে বেকার সমস্যার মতো বিষয়গুলোর সমাধান করা যায়’।
হাজরিকা আরও বলেন,রাজ্যের ছয় জাতীয় জনগোষ্ঠীকে উপজাতির মর্যাদা দেওয়ার ইস্যুটি বর্তমানে থাকা তফশিলি উপজাতিদের মধ্যে ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে। তাই এই ইস্যুটি নিয়ে বর্তমানে থাকা তফশিলি সম্প্ৰদায়ের আশঙ্কা দূর করতে সব দাবিদারদের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করা উচিত। কয়েকজন মন্ত্ৰীর বিবৃতিও পরিস্থিতিকে জটিল করেছে। তাই মুখ্যমন্ত্ৰীকে ওই সব মন্ত্ৰীর সঙ্গে আলোচনায় বসে এই সমস্ত জটিলতার অবসান ঘটাতে মুখ্যমন্ত্ৰীকে অনুরোধ করেছেন হাজরিকা। ক্যা নিয়ে মানুষের ক্ষোভ প্ৰশমনে ব্যবস্থা গ্ৰহণের জন্য হাজরিকা মুখ্যমন্ত্ৰীকে অনুরোধ করেছেন।
বিধায়ক প্ৰশান্ত ফুকন বলেন,‘ক্যা নিয়ে পরিস্থিতি এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে আমরা প্ৰায় সপ্তাহ খানেক নিজের বাড়িতেই আবদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। আমাদের ঘরবাড়িতে হামলা হয়েছে। অবশেষে কোনও ক্ৰমে আমরা পালিয়ে গুয়াহাটিতে এসেছি’। ক্যা নিয়ে অসমিয়া মানুষের মন থেকে শঙ্কা ঘোচাতে তিনি মুখ্যমন্ত্ৰীকে কেন্দ্ৰের সঙ্গে আলোচনা করতে অনুরোধ জানান। ‘আমরা চাইছি আমাদের সংশ্লিষ্ট কেন্দ্ৰে উন্নয়নের কাজ দ্ৰুত এগিয়ে নিতে। বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্য বিধায়করা হলেন গণেশ লিম্বু,রূপক শর্মা,ভাস্কর শর্মা,চক্ৰধর গগৈ,সুরেন ফুকন,অশোক সিংঘল,সঞ্জয় কিষেন এবং ঋতুপর্ণ বরুয়া।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ প্ৰলোভনের কৌশল থেকে সরকারকে দূরে থাকার আহ্বান সমুজ্জ্বলের
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: AASU Rally Against CAA 2019 in Kokrajhar