প্ৰলোভনের কৌশল থেকে সরকারকে দূরে থাকার আহ্বান সমুজ্জ্বলের

প্ৰলোভনের কৌশল থেকে সরকারকে দূরে থাকার আহ্বান সমুজ্জ্বলের

গুয়াহাটিঃ রাজ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন(ক্যা)-২০১৯-এর বিরুদ্ধে রাজ্যে চলা গণতান্ত্ৰিক আন্দোলনের মুখ বন্ধ করতে রাজ্য সরকার দমন,বিভাজন ও প্ৰলোভনের কৌশল গ্ৰহণ করছে। এই অভিযোগ করেছেন সারা অসম ছাত্ৰ সংস্থার(আসু)মুখ্য উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল কুমার ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার গুয়াহাটির চান্দমারিস্থিত আসাম ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটের খেলার মাঠে সিএএ(ক্যা)-এর বিরুদ্ধে শিল্পী সমাজের আয়োজিত প্ৰতিবাদ কর্মসূচিতে ভাষণ দিচ্ছিলেন আসু নেতা। তিনি বলেন,‘ক্যার বিরুদ্ধে আমাদের শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্ৰিক প্ৰতিবাদ চলবে। একই সঙ্গে ক্যা-র বিরুদ্ধে আমরা আমাদের আইনি লড়াইও চালিয়ে যাবো’। অসম বিরোধী এই আইন ক্যা রদ না করা পর্যন্ত শিল্পী সমাজ তাদের কাজ করার পাশাপশি প্ৰতিবাদও চালিয়ে যাবেন। ‘আমি সরকারকে আবেদন জানাচ্ছি অসমিয়া সমাজে বিভাজন আনার এই প্ৰয়াস বন্ধ করা হোক। তারা রাজ্যে বেকারদের চাকরি দেওয়ার প্ৰতিশ্ৰুতি দিচ্ছে। এধরনের প্ৰস্তাবকে আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাবো। আমাদের যুবকদের চাকরির প্ৰয়োজন রয়েছে। তবে আমি সরকারকে এটা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই যে চাকরির নামে তারা যেন আমাদের যুবকদের দিবাস্বপ্ন দেখানোর প্ৰয়াস বন্ধ করে। তারা ভেবেছিল চাকরির টোপ দিয়ে ক্যা-র বিরুদ্ধে চলা গণতান্ত্ৰিক আন্দোলনে ঠান্ডা জল ঢেলে দেবে। আমাদের যুবকরা সরকারি চাকরি পাওয়ার পরও আন্দোলন চালিয়ে যাবে’-বলেন ভট্টাচার্য।

আসু নেতা আরও বলেন,‘সরকার রাজ্যের দুহাজার শিল্পীর প্ৰত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার প্ৰতিশ্ৰুতি দিয়েছে। আমি মনে করি এই অর্থ খুবই নগণ্য। ক্যার বিরুদ্ধে শিল্পী সমাজের মুখ এভাবে বন্ধ করতে চাইলে সরকার ভুল করবে। এই আইন রদ না করা পর্যন্ত শিল্পী সমাজ এর বিরোধিতাই করে যাবেন’।

আসুর উপদেষ্টা আরও বলেন,‘আন্দোলনে অংশগ্ৰহণকারী ক্যা বিরোধী সব সংগঠনের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। তাই ক্যার বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদ চালিয়ে যেতে এবং এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের জন্য আমরা আমাদের স্ট্ৰ্যাটিজি প্ৰস্তুত করেছি। সারা বিশ্বের লক্ষাধিক অসমিয়া মানুষ ক্যার বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদে এগিয়ে এসেছেন। তাই সরকারের এই আইন অবিলম্বে রদ করে অন্তত তাঁদের প্ৰতি শ্ৰদ্ধা প্ৰদর্শন করা উচিত’।

কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ৰ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রাহুল বরদলৈ বলেন,আমরা পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যার বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবো। ‘আমরা আমাদের রক্ত দেবো,তেল দেবো না’ শ্লোগান পাল্টে নিয়েছি ‘রক্তও দেবো না,তেলও দেবো না’। রাহুল আরও বলেন,‘ইতিহাস বড়ই নিষ্ঠুর। হিটলার সারা বিশ্ব জয় করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ধোপে টেকেননি। নেতা,মন্ত্ৰীরা পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় রয়েছেন। কিন্তু মেয়াদ শেষ হবার পর তাঁরা কি ক্যামেরার মুখ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে পারবেন’?

তিনি বলেন,গত ১১ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রয়েছে। মন্ত্ৰীরা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্ৰি হিমালয় থেকে নিয়ে থাকতে পারেন। কিন্তু আজকের যুগ সম্পূর্ণ আলাদা। সারা দেশেই এখন অ্যাডমিশন ফর্ম অনলাইনে দাখিল করতে হয়। কিন্তু অসমে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় ছাত্ৰ ছাত্ৰীরা তাদের অ্যাডমিশন ফর্ম দাখিল করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এদিকে ক্যার বিরুদ্ধে চান্দমারির মাঠে প্ৰতিবাদে শামিল হওয়া শিল্পীরা বলেছেন সরকারের প্ৰস্তাবিত ৫০ হাজার টাকার ললিপপ তারা কখনও গ্ৰহণ করবেন না। এধরনের প্ৰস্তাব দিয়ে সরকার শিল্পীদের আবেগ অনুভূতিকে অসম্মান করেছে। ক্যার বিরুদ্ধে আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে যারা প্ৰাণ হারিয়েছে সরকারের এই অর্থ তাদের পরিবারকে দেওয়া উচিত। সবকিছুই আবার আগের মতো স্বাভাবিক হবে যদি সরকার ওই আইন রদ করে-বলেন শিল্পীরা।

অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: AASU Rally Against CAA 2019 in Kokrajhar

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com