সংবাদ শিরোনাম

সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জমি দখলকারীদের বিদ্যুৎ সংযোগ,বন এবং এপিডিসিএল দায়িত্ব এড়াতে পারে না

Sentinel Digital Desk

গুয়াহাটিঃ অসম সরকারের বিভিন্ন বিভাগে তালমিল ও সহযোগিতার যে অভাব রয়েছে,তার সুস্পষ্ট লক্ষণ ফুটে উঠেছে রাজ্যে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জমি বেদখলের বিষয়টিকে কেন্দ্ৰ করে। দেখা গেছে যে রাজ্যের যে সমস্ত সংরক্ষিত বনাঞ্চল দখলদারদের কবলে রয়েছে এপিডিসিএল(আসাম পাওয়ার ডিস্ট্ৰিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড)ওই সব দখলদারদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে। তাই বনাঞ্চলের জমি দখলকারীদের উচ্ছেদের যখনই প্ৰশ্ন উঠছে তখনই দখলদাররা বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়ার বৈধ কাগজপত্ৰ দেখিয়ে নিজেদের জমির অধিকার প্ৰতিপন্ন করার চেষ্টা করছেন।

গুয়াহাটি মহানগরীর শহরতলি এলাকা গড়ভাঙ্গা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে জবরদখলের মামলা বিভিন্ন সরকারি বিভাগের মধ্যে তালমিল না থাকারই প্ৰমাণ তুলে ধরে। প্ৰায় ১০০টি পরিবার গড়ভাঙ্গা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের জমি দখল করে বাসস্থান নির্মাণ করে বসেছেন। এপিডিসিএল এই সব দখলদারদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নিয়েছে। বন বিভাগ এই সমস্ত দখলদারদের বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়ার জন্য এপিডিসিএলকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু এপিডিসিএল জবরদখলকারীদের বিদ্যুৎ সংযোগ আজ অবধি বিচ্ছিন্ন করেনি। গুয়াহাটির লখরা অঞ্চলে থাকা আঞ্চলিক বন কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা অরূপ কুমার কলিতা বলেন,‘গড়ভাঙ্গা সংরক্ষিত বনাঞ্চলে কিছু দখলদারদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার খবর আমাদের নজরে আসার পর আমরা ‘২০১৯-এর সেপ্টেম্বরে এপিডিসিএলকে একটি চিঠির মাধ্যমে দখলদারদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। এর কিছুদিন পরই এপিডিসিএল-এর জনাকয়েক কর্মী আমাদের বন কার্যালয়ে আসেন এবং ওই সময় বনাঞ্চল দখলকারীদের কয়েকজন যে বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছেন এ ব্যাপারে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তখন এপিডিসিএল-এর কর্মীরা বিশ্বকর্মা পুজোর পরই দখলদারদের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হবে বলে আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরও এপিডিসিএল কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। এরপর ২০১৯-এর ৯ অক্টোবর আমরা ফের এপিডিসিএলকে একটি চিঠি দিয়ে দখলদারদের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাই। কিন্তু এই অনুরোধেও কাজ হয়নি। ২০১৯-এর ১৬ অক্টোবর মধ্য অসমের সিসিএফ(চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্ট)এপিডিসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজারকে চিঠি দেন। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় আজ অবধি দখলদারদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি’।

দ্য সেন্টিনেল এই ইস্যু নিয়ে এপিডিসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজার রাকেশ আগরওয়ালের সঙ্গে যোগা্যোগ করলে তিনি বলেন,‘পরিবারগুলো যদি অবৈধভাবে গড়ভাঙ্গা বনাঞ্চলের জমি দখল করে থাকে তাহলে আমরা তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে পারি না’। আমি অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখবো’।

তাই প্ৰশ্ন উঠেছে,বর্তমান এই পরিস্থিতির জন্য কারা দায়ী? কমবেশি দায় তো দুটো বিভাগের কাঁধেই বর্তায়। প্ৰথমত বন বিভাগ বনাঞ্চলের জমি দখলের বিরুদ্ধে গোড়াতেই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। ওদিকে এপিডিসিএল-এরও দখলদারদের বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া উচিত হয়নি। এক্ষেত্ৰে উভয় বিভাগই বিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না।

বন বিভাগের তরফে সরকারি সূত্ৰে বলা হয়েছে সময়ে সময়ে তারা উচ্ছেদ অভি্যান চালাচ্ছে যদিও কিছুদিন যেতে না যেতেই দখলদাররা আবার ওই সব স্থানে ঘাঁটি গেড়ে বসছে। উচ্ছেদ অভি্যানের জন্য একজন ম্যাজিস্ট্ৰেট পুলিশ কর্মী,মহিলা পুলিশ এবং অন্যান্যদের থাকাটা প্ৰয়োজন। বন বিভাগ চাইলে অধিকাংশ সময়ে এই সমস্ত কর্মীদের একসঙ্গে পাওয়াটা জেলা কর্তৃপক্ষের সামনে অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া উচ্ছেদের সময় একটা দৃশ্য তো হামেশাই দেখা যায়। উচ্ছেদ করতে গেলেই দখলদাররা হৈচৈ জুড়ে দেন। দখলদারদের আর্তনাদের জন্য উচ্ছেদ মাঝপথে স্থগিত রাখারও অজস্ৰ উদাহরণ রয়েছে বলে জানান একজন বনকর্তা।

তবে বন কর্তারা বলেন,বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য এপিডিসিএল অনেক নথিপত্ৰ চায় কিন্তু বনাঞ্চলের জমি দখলকারীদের কিসের ভিত্তিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে এপিডিসিএল-প্ৰশ্ন তুলেছে বন বিভাগ।

অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: CCTV footage | Thieves try to break open Locker Machine inside SBI premises in Digboi! But failed