ক্যার বিরুদ্ধে ডিব্ৰুগড়ে আসুর ‘জনতার গর্জন’ সমাবেশে জনসমুদ্ৰ

ক্যার বিরুদ্ধে ডিব্ৰুগড়ে আসুর ‘জনতার গর্জন’ সমাবেশে জনসমুদ্ৰ

ডিব্ৰুগড়/তেজপুরঃ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের(ক্যা)বিরুদ্ধে আসু ও অন্যান্য জাতীয় সংগঠনের উদ্যোগে মঙ্গলবার ডিব্ৰুগড়ের চৌকিডিঙ্গি খেলার মাঠে আয়োজিত ‘জনতার গর্জন’ কর্মসূচিতে সমবেত হন প্ৰায় এক লক্ষ মানুষ। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় এই সমাবেশ। সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে আসুর(সারা অসম ছাত্ৰ সংস্থা)সাধারণ সম্পাদক লুরিনজ্যোতি গগৈ বলেন,অসমিয়া মানুষ কখনোই ক্যা মেনে নেবেন না। কারণ এটা অসমিয়া ভাষা,সংস্কৃতি,শিল্প এবং অস্তিত্বের ক্ষেত্ৰে চরম হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন,‘গণতান্ত্ৰিক এই লড়াই অপ্ৰতিরোধ্য গতিতে চলবে,যতদিন না ক্যা প্ৰত্যাহার করা হচ্ছে’।

বিশিষ্ট অসমিয়া সংগীত শিল্পী নীল আকাশ এই প্ৰতিবাদ কর্মসূচিতে অঙশ নিয়ে সমাবেশে রাজ্যের জাতীয় সংগীত ‘অ মোর আপোনার দেশ’ পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন। এদিনের এই গণতান্ত্ৰিক সমাবেশে বিভিন্ন শিল্পী,শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিকরা অংশ নেন। অসম সাহিত্যসভার প্ৰাক্তন সভাপতি ড. নগেন শইকিয়া বিতর্কিত আইনটির বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। বরিষ্ঠ বেতার শিল্পী সৈয়দ সাদুল্লা সমাবেশে সর্ব শ্ৰেণি ও ধর্মের মানুষ অংশগ্ৰহণ করে একাত্মতা প্ৰকাশ করায় সন্তোষ ব্যক্ত করেন।

তেজপুরের খবরঃ আসু ও ৩০টি বিভিন্ন জাতীয় সংগঠন এদিন তেজপুরের নেহরু ময়দানে ক্যা-র বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। সাংস্কৃতিক কর্মী,শিক্ষাবিদ এবং বরিষ্ঠ নাগরিকরা সমাবেশে অংশগ্ৰহণ করেন। বৃহত্তর তেজপুর এলাকার প্ৰায় তিন হাজার মানুষ হাতে লিফলেট,ব্যানার,পোস্টার নিয়ে ক্যার বিরুদ্ধে শ্লোগান দেন। এখানে আয়োজিত এই সমাবেশে বক্তব্য পেশ করে আসুর মুখ্য উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য বলেন,‘অবৈধ অনুপ্ৰবেশকারীদের অসমে আনতে কংগ্ৰেস অসম চুক্তি ভেঙেছিল এবং রূপায়ণ করেছিল আইএমডিটি আইন। এখন বিজেপি সরকার গরিষ্ঠতার জোর নিয়ে শহিদ দিবসের দিন সংসদে ক্যা পাস করেছে। কিন্তু আমরা কখনোই ক্যা মেনে নেবো না। ১৯৭১-এর ২৫ মার্চের পর রাজ্যে আসা অবৈধ বিদেশির বোঝা অসম আর কাঁধে নিতে পারবে না,তা সে হিন্দু অথবা মুসলিম যেই হোক না কেন। বিজেপি সরকার অসমের জাতীয় জনগোষ্ঠীর জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণা করে বিভাজনের রাজনীতি করছে। তবে মানুষ ক্যা রদ না হওয়া অবধি প্ৰতিবাদ চালিয়েই যাবেন’। ভট্টাচার্য আরও বলেন,অসম সরকার রাজ্যের ২হাজার শিল্পীকে ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। এটা শিল্পীদের ওপর সরকারের প্ৰভুত্ব বিস্তারেরই একটা কৌশল। সরকার চাইছে ক্যার বিরুদ্ধে শিল্পীদের মুখ বন্ধ করতে। তিনি বলেন,‘দেশের মানুষ ক্যার বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদ জানাচ্ছেন মাত্ৰ একটা কারণেই। সেটা হচ্ছে ধর্ম ভিত্তিক। কিন্তু অসমে আমরা ক্যার বিরুদ্ধে লড়ছি দুটো কারণে। প্ৰথম কারণ হলো ক্যা আমরা মানবো না। দ্বিতীয়ত,এটা অসম চুক্তি লঙ্ঘন করে ৭১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত আসা অবৈধ প্ৰব্ৰজনকারীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতে চাওয়া হচ্ছে। ‘উত্তর পূর্ব ছাত্ৰ সংগঠন(নেসো)এটা প্ৰমাণ করে দিয়েছে,উত্তর পূর্বাঞ্চল রাজনৈতিক দিক থেকে ভিন্ন হলেও মানসিক ও আবেগিক ক্ষেত্ৰে আমরা সবাই এক’।

আসুর সভাপতি দীপাঙ্ক কুমার নাথ বলেন,‘অসমে ৪৮ শতাংশ মানুষ অসমিয়া ভাষায় কথা বলেন। তাই ৭১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত আসা লোকেদের বোঝা আমরা গ্ৰহণ করলে অসমেই অসমিয়ারা সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। সমাবেশে নেসোর চেয়ারম্যান স্যামুয়েল জিরওয়া,এজেওয়াইসিপির সভাপতি রানা প্ৰতাপ বর্মা,সারা অসম কর্মচারী পরিষদের সভাপতি বাসব কলিতা ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: An aerial view of the Dibrugarh Protest "Janataar Gorjon" programme, Watch Here

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com