নিখোঁজ হওয়ার ৩৬ ঘণ্টা পর ক্যাফে কফি ডে-র প্ৰতিষ্ঠাতা ভিজি সিদ্ধার্থের মৃতদেহ উদ্ধার

নিখোঁজ হওয়ার ৩৬ ঘণ্টা পর ক্যাফে কফি ডে-র প্ৰতিষ্ঠাতা ভিজি সিদ্ধার্থের মৃতদেহ উদ্ধার

ক্যাফে কফি ডের(সিসিডি)প্ৰতিষ্ঠাতা ভিজি সিদ্ধার্থের নিখোঁজ হওয়ার রহস্যের অবশেষে যবনিকা পড়লো। নিখোঁজ হওয়ার ৩৬ ঘণ্টা পর কর্নাটকের নেত্ৰাবতী নদী থেকে তাঁর শব উদ্ধার হওয়ায় অন্তর্ধান রহস্যের অবসান ঘটে। এর আগে সিসিডি-র প্ৰতিষ্ঠাতা বেঙ্গালুরুর নেত্ৰাবতী নদীর সেতু থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন।

কর্মচারীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে লেখা একটি চিঠি রেখে তিনি নিখোঁজ হন। ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার। ওই দিন রাতে নিজের দপ্তরে কাজ সেরে গাড়ির চালককে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন। মাঝপথে নেত্ৰাবতী নদীর সেতুর কাছে এসে ড্ৰাইভারকে বলেন তাঁকে ওখানে নামিয়ে দিতে। মণিবের নির্দেশ শিরোধার্য করে ড্ৰাইভার তাঁকে নামিয়ে দেন। এর ঘণ্টা খানেক বাদে নিখোঁজ হন সিদ্ধার্থ। তখন থেকে তাঁর কোনও হদিশ পাওয়া যাচ্ছিলো না।

সিসিডি-র প্ৰতিষ্ঠাতা যে চিঠি লিখেছিলেন তাতে তিনি কর্মচারীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন,‘একটা গ্ৰহণযোগ্য ও লাভজনক ব্যবসা তিনি তাদের দিতে পারেননি। তার জন্য কর্মচারীদের কাছে তিনি ক্ষমা প্ৰার্থী’।

ব্যবসায় বাড়তি ঝুঁকি ও চাপ সামলাতে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সিদ্ধার্থ। তাঁর এই আত্মহননের ঘটনা এটাই স্মরণ করিয়ে দেয় যেকোনও মুহূর্তে জীবনের অন্তিম ক্ষণ ঘনিয়ে আসতে পারে। ক্যাফে কফি ডে-র চেইন ব্যবসা করে একজন সফল্য উদ্যোগী হিসেবে উঠে এসেছিলেন সিদ্ধার্থ। কফির বিপনি ভালই চলছিল।

ব্যবসার শুরুতে সিদ্ধার্থ বেঙ্গালুরুতে একটি কফি বিপণি খুলেছিলেন। পরবর্তী সময়ে এই চেইন ব্যবসা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। গোটা দেশে তাঁর কফি বিপণির সংখ্যা বেড়ে ১৫ হাজারে দাঁড়ায়। নিখোঁজ হওয়ার আগে ফেলে যাওয়া চিঠিতে সিদ্ধার্থ আরও উল্লেখ করেছেন ‘আমি দীর্ঘদিন লড়াই করেছি। কিন্তু আজ আমি হাত তুলে দিচ্ছি। কারণ আমার পক্ষে আর চাপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। চিঠিতে যে তারিখের উল্লেখ করা হয়েছিল সেটা ছিল ২৭ জুলাই। খবরে প্ৰকাশ,ছমাস আগে এক বন্ধুর কাছ থেকে সিদ্ধার্থ মোটা অঙ্কের টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু ঋণ দাতা তার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ বাড়িয়ে দেন। আয়কর বিভাগের কাছেও তাঁকে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে’। চিঠির বয়ানে তাঁরও উল্লেখ রয়েছে।

কিন্তু পরিস্থিতির চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধার্থ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। সিদ্ধার্থের এই আত্মহননের ঘটনা অভিভাবক এবং তাদের সন্তানদের একটা বড় শিক্ষার বিষয়। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সমস্ত রকম চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা ও ঝুঁকি নেওয়ার মতো মানসিকতা গড়ে তোলার শিক্ষা দেওয়া উচিত। জীবনে ঝুঁকি আসবে। থাকবে উত্থান পতন। তাই সমস্তরকম ব্যর্থতা একপাশে ঠেলে দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে প্ৰত্যেককে। ব্যবসায় সামাজিক,মানসিক ও আর্থিক চাপ থাকাটা তো স্বাভাবিক। তাই এই সব বাধা টপকে এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে প্ৰত্যেককে।

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com