ধেমাজি বিস্ফোরণ মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন ও দুজনের কারাবাসের রায় আদালতের

ধেমাজি বিস্ফোরণ মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন ও দুজনের কারাবাসের রায় আদালতের
Published on

লখিমপুরঃ দীর্ঘ ১৫ বছর পর বৃহস্পতিবার ধেমাজি বিস্ফোরণ মামলার রায় দিলেন জেলা দায়রা বিচারপতি। ২০০৪ সালে স্বাধীনতা দিবসের দিন ধেমাজি বিস্ফোরণ কাণ্ড গোটা রাজ্যকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এই মামলায় জেলা দায়রা বিচারপতি ১৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৪ জনকে যাবজ্জীবন ও দুজনকে চার বছরের সশ্ৰম কারাবাসের সাজা শুনিয়েছেন। সাক্ষ্যপ্ৰমাণ না পাওয়ায় আটজনকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে একজন অভিযুক্তকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করেছেন বিচারপতি।

যে চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাবাসের শাস্তি ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে,তারা হলেন লীলা গগৈ,মুহি সন্দিকৈ,দীপাঞ্জলি বরগোঁহাই এবং যতীন দুয়রী। বিচারপতি যে দুজন অভিযুক্তকে চার বছরের সশ্ৰম কারাবাস ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা শুনিয়েছেন তারা হলো প্ৰশান্ত ভুঁইয়া ও হেমেন গগৈ। অন্যদিকে আরও এক অভিযুক্ত রশিদ ভরালিকে পলাতক ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ঘোষিত ধেমাজি মামলার চূড়ান্ত রায়ে আট অভিযুক্তকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছে। বেকসুর খালাস পাওয়া এই আট অভিযুক্ত হলেন-জয়া চুতিয়া,মীনা বরুয়া,জিতেন চুতিয়া,অপ্সরা বরুয়া,গোবিন্দ কলিতা,জয়চন্দ্ৰ চুতিয়া,চন্দ্ৰনাথ গগৈ ও মোহন চুতিয়া।

উল্লেখ্য,২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের দিন ধেমাজি কলেজের খেলার মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শক্তিশালী বিস্ফোরণে ১০টি নিরীহ শিশু,তিনজন মহিলা প্ৰাণ হারিয়েছিলেন। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছিলেন অন্যান্য আরও ২১ জন। সংযুক্ত মুক্তি বাহিনী অসম(আলফা)এই বিস্ফোরণ ঘটিয়ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

বেআইনি কার্যকলাপ প্ৰতিরোধ আইন ‘১৯৬৭-র অধীনে এই মামলা(নং ১২৭/২০১১ ইউএস ১২০বি/১২১/১২১এ/১২২/৩০২/৩২৬)নিয়ে ধেমাজি জেলা দায়রা বিচারপতির আদালতে বিচার চলছিল। রাজ্য তথা দেশ কাঁপানো এই বিস্ফোরণ কাণ্ডের প্ৰায় সাত বছর পর ২০১১ সালে পুলিশ ১৫ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছিল। চার্জশিটে উল্লেখ করা ব্যক্তিরা হলো যতীন দুয়রী ওরফে রংমন ওরফে মাধুর্য গোঁহাই,লীলা খান ওরফে লীলা গগৈ,দীপাঞ্জলি বরগোঁহাই,মুহি সন্দিকৈ,প্ৰশান্ত ভুঁইয়া,মোহন চুতিয়া,চন্দ্ৰনাথ গগৈ,হেমেন গগৈ ওরফে বিনোদ,গোবিন কলিতা,জয়চন্দ্ৰ চুতিয়া,অপ্সরা বরুয়া,জয়া চুতিয়া,জিতেন চুতিয়া ওরফে জুনটি,মীনা বরুয়া এবং রশিদ ভরালি।

উল্লেখ করা যেতে পারে যে গত ২০ জুন এই মামলার চূড়ান্ত রায়দানের কথা ছিল। কিন্তু ধেমাজি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ঘনশ্যাম লাহনের আকস্মিক মৃত্যুর জন্য ওই দিন রায় দান স্থগিত রাখা হয়েছিল। ধেমাজি বিস্ফোরণ মামলা নিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছর আদালত গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত রায় দিলেও ভুক্তভোগী পরিবারগুলো তেমন খুশি হতে পারেননি বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িতদের মৃত্যুদণ্ড কামনা করেছিলেন। ভুক্তভোগীরা বলেছেন,অভিশপ্ত ওই দিনটির কথা মনে হলে আজও তাঁরা শিউরে ওঠেন।

logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com