নুমলিগড়ঃ কাজিরঙা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যান(কেএনপি)ফের দখলদারদের হুমকির মুখে পড়েছে। ২০১৬ সালে রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের আশপাশে বসতি গড়ে তোলা অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কিন্তু অবৈধ দখলদাররা ফের উদ্যানের সংরক্ষিত এলাকায় ঘাঁটি গড়ার রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে।
২০১৬ সালে গৌহাটি হাইকোর্ট কাজিরঙার আশেপাশে অবৈধভাবে আস্তানা গেড়ে বসা লোকেদের উচ্ছেদ করার নির্দেশ দিয়েছিল। ওই নির্দেশের পরিপ্ৰেক্ষিতে ২০১৬ সালে কাজিরঙা উদ্যানের কাছে বান্দরডুবি,পালখোয়া এবং দেউচুর চাং গ্ৰামে উচ্ছেদ আভি্যান চালানো হয়েছিল। এই অভি্যানকালে উদ্যান লাগোয়া উল্লিখিত তিনটি গ্ৰামের প্ৰায় ৫২৫ হেক্টর জমি থেকে ৩০০টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কাজিরঙা উদ্যানে চোরাশিকারিদের ঘন ঘন গন্ডার হত্যার পরিপ্ৰেক্ষিতে পার্কের গা ঘেঁষে থাকা কিছু এলাকা থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের দাবি দীর্ঘদিন থেকে উঠে আসছিল। কারণ ওই এলাকায় অবৈধ দখলদারদের মধ্য থেকে কিছু লোক গন্ডার নিধনে চোরাশিকারিদের ইন্ধন জোগানোর অভি্যোগ ছিল। ওই সমস্ত লোকেদের একাংশের মদত পাওয়ায় চোরাশিকারিদের পক্ষে গন্ডার নিধন সহজ হয়েছিল বলে অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে। দখলদারদের অনেকেই অবৈধ বাংলাদেশি প্ৰব্ৰজনকারী বলেও অভি্যোগ রয়েছে।
১৬ সালের ওই উচ্ছেদ অভি্যানের পর থেকে উদ্যান লাগোয়া ওই ৫২৬ হেক্টর জমির দিকে আর ফিরে তাকানো হয়নি। অভি্যোগে প্ৰকাশ যে অবৈধ দখলদাররা ওই জমিগুলি কব্জা করার জন্য আবার ফিরে এসেছে। শুধু তাই নয়,দখলদাররা ওই সমস্ত এলাকায় চাষবাসও শুরু করে দিয়েছে। উদ্যান কর্তৃপক্ষ জমি দখলের ব্যাপারে এই সমস্ত লোকেদের প্ৰশ্ন করলে তারা বলে যে,জমিগুলি অনেকদিন থেকে ফাঁকা পড়ে আছে। এরজন্যই চাষবাস করে তারা জমিগুলোকে ব্যবহার করছে।
এই প্ৰতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় কেএনপির ডিরেক্টর পি শিবকুমার বলেন,১৯০৫-১৯৫০ সাল পর্যন্ত কাজিরঙা যখন সংরক্ষিতবনাঞ্চল ছিল তখন থেকেই এই এলাকাগুলো কাজিরঙা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের মধ্যেই রয়েছে। ১৯৫৩ সালের পর চা চাষের জন্য এলাকাগুলিকে অসংরক্ষিত করা হয়েছিল। ১৯৭৪ সালে কাজিরঙা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের মর্যাদা লাভ করে। ১৯৮৫ সালে এই এলাকাগুলো গাছপালা লাগানোর সামাজিক বনানিকরণ বিভাগের হাতে দেওয়া হয়। কিন্তু বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও প্ৰতিবন্ধকতার জন্য বন বিভাগ এলাকাটিতে বনসৃজনের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। এরপর ওই জমি ফের রাজস্ব বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর ২০১৬ তে গৌহাটি হাইকোর্টের তরফ থেকে বলা হয় ৫২৫ হেক্টর এলাকা কাজিরঙা পার্কের এবং সরকারকে ওই এলাকায় উচ্ছেদ চালিয়ে জমি কেএনপি কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেয় তারা। কিন্তু গত ৪ বছরে এই বিষয়টির ক্ষেত্ৰে কোনও অগ্ৰগতি হয়নি। ‘উচ্ছেদিত ৫২৫ হেক্টর জমি কেএনপি-র হাতে তুলে দিতে সরকার যদি দ্ৰুত সরকারি প্ৰক্ৰিয়াগুলো সম্পন্ন না করে তাহলে জবরদখল চলতে থাকবে এবং আগামি দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে মোড় নেবে। সরকারি প্ৰক্ৰিয়া এবং এর সঙ্গে জড়িত অন্যান্য বিষয়গুলি সমাধান করে সরকার ওই জমি আমাদের হাতে তুলে দিলেই আমরা এর রক্ষণাবেক্ষণে ব্যবস্থা নিতে পারবো’-বলেন শিবকুমার।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ রিমা দাসের ভিলেজ রকস্টার্স অসমে স্কুলের ইংরাজি পাঠক্ৰমে অন্তর্ভুক্ত
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Ratul Gogoi Policeman wishes goodluck to