মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেও কামাখ্যায় সাধুরূপী একজন কিন্নর

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেও কামাখ্যায় সাধুরূপী একজন কিন্নর

গুয়াহাটিঃ কামাখ্যা ধামে অম্বুবাচি মেলা উপলক্ষে তৃতীয় লিঙ্গের বেশকিছু ভক্তের সমাগম দেখা গেছে। এদেরই একজনের নাম প্ৰাচাল সিং(২৭)। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেও সাধুর বেশ নিতে হয়েছে তাঁকে। সন্ন্যাসীরূপী প্ৰাচাল দিল্লির বাসিন্দা। ছেলে হিসেবেই বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছেন তিনি।

কামাখ্যা ধামে নতুন করে শুরু হওয়া কিন্নর আখড়ায় অন্যতম কিন্নর প্ৰাচাল। চাকরি করার অদম্য আগ্ৰহ ছিল। কিন্তু পুরুষ কিংবা নারী কোনও একটা সারিতে না পড়ায় মনের আশা মনের মধ্যেই পুষে রেখেছেন তিনি।

পাঁচ বছর বয়স থেকে কিন্নর মা ভবানীর তত্ত্বাবধানে থেকে পড়াশোনা করেছেন। মুম্বাইয়ের ডিলকেব কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট থেকে ২০১৪ সালে ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠক্ৰম সম্পন্ন করেন প্ৰাচাল।

বর্তমানে কোনও ব্যক্তিগত মালিকাধীন প্ৰতিষ্ঠানে চাকরি পেলে করবেন কিনা জানতে চাওয়া হলে প্ৰাচাল বলেন,চাকরি পেলে অবশ্যই করবেন।

এদিকে কিন্নর আখড়ার প্ৰতিষ্ঠাতা মা ভবানী নাথ বাল্মিকী ছোটবেলা থেকেই বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে নামভর্তি ফর্মে লিঙ্গ পুরুষ উল্লেখ করে প্ৰাচালকে পড়াশোনা করিয়েছেন। কিন্তু এরপরই প্ৰাচালের পরিচয় হয় কিন্নর।

‘২০১৫ সালে প্ৰাচাল তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার লাভ করেন। এর আগে আমিই প্ৰাচালকে পুরুষের বেশে চুল কেটে স্কুল এবং কলেজে ভর্তি করিয়েছি। প্ৰাচাল পুরো শিক্ষা গ্ৰহণ করেছে পুরুষ হিসেবে’-বলেন মা ভবানী। সরকারের কাছে তাঁর অনুরোধ,‘শিক্ষা ব্যবস্থায় পুরুষ-মহিলার মতো তৃতীয় লিঙ্গের একটা বিভাগ রাখা উচিত যাতে পরীক্ষার ফলাফলে তাদের প্ৰমাণপত্ৰে তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। যদি চাকরির জন্য ওকে পাঠাই তাহলে পুরুষ হিসেবে চাকরি দেওয়া হবে কি?কারণ প্ৰাচাল তো পুরুষ নয়’।

কিন্নর সমাজের দুর্দশার কথা ব্যক্ত করে তিনি বলেন,‘যে বস্তু থেকে ফায়দা বা লাভ হবে মানুষ সেটায় কদর করে। একটা গরু যতদিন দুধ দেয় ততদিন তার সমাদর থাকে। কিন্তু এরপর আর কেউ ফিরেও তাকায় না। আমাদের মতো সন্তানদের কোনও মূল্য নেই। বিয়ে করতে পারে না,বিয়ে হবেও না,চাকরি মেলে না,সন্তান জন্ম দেবার ক্ষমতাও নেই। বিনে পয়সায় কে কতদিন খাওয়াবে? আমাদের মতো মানুষকে পড়াশোনা করিয়েই বা কী লাভ?

উল্লেখ্য,মা-ভবানী আম আদমি পার্টির হয়ে ৫২ নং এলাহাবাদ কেন্দ্ৰ থেকে প্ৰতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন যদিও জয়ী হতে পারেননি। গত ২১ জুন থেকে নির্জলা উপবাস পালন করছেন মা ভবানী। তাঁর এই ব্ৰত চলবে ২৫ জুন অবধি। বর্তমানে ৫০ জনের বেশি কিন্নর তাঁর আখড়ায় রয়েছেন-জানান মা ভবানী।

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com