কাজিরঙাঃ রাজ্যপাল জগদীশ মুখি রবিবার আকাশ থেকে কাজিরঙার বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। বন্যা বিধ্বস্ত উদ্যানের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কেও বুঝ নেন। রাজ্যপাল বোকাখাতে পৌঁছার পর তাঁকে স্বাগত জানান বনমন্ত্ৰী পরিমল শুক্লবৈদ্য এবং জেলা প্ৰশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা। বনমন্ত্ৰী শুক্লবৈদ্যকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যপাল মুখি রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের বন্যা কবলিত কহরা রেঞ্জ পরিদর্শন করে ওখানকার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন। বনকর্মীরা ওই এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে রাজ্যপালকে বুঝিয়ে বলেন। বন্যায় উদ্যানের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যে সম্পর্কেও বনকর্মীরা তাঁকে অবগত করান। কাজিরঙায় বন্য প্ৰাণীদের আশ্ৰয় নেওয়ার জন্য বিশেষ করে উঁচু মঞ্চ নির্মাণ করায় বনবিভাগের প্ৰশংসা করেন রাজ্যপাল। একই সঙ্গে রাজ্যপাল বলেন,উদ্যানের ভিতর এধরনের আরও উঁচু স্থান নির্মাণ করা প্ৰয়োজন। এটা করা হলে বন্যার সময় জীবজন্তুরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি না করে ওই উঁচু স্থানে গিয়ে অনায়াসে আশ্ৰয় নিতে পারবে। এতে বন্যার সময় জীবজন্তুর মৃত্যু অনেকাংশেই রোখা সম্ভব হবে। রাজ্যপাল এদিন ডিফলু ক্যাম্পটি পরিদর্শন করেন। উদ্যান লাগোয়া এলাকার বহু মানুষ এই ক্যাম্পে আশ্ৰয় নিয়েছেন। তিনি বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত সাহা্য্যের ব্যবস্থা করতে জেলা প্ৰশাসনকে নির্দেশ দেন। ত্ৰাণ শিবিরে আশ্ৰিতদের সঙ্গে কথা বলে রাজ্যপাল তাঁদের জেলা প্ৰশাসনের তরফ থেকে সম্ভাব্য সব সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। বন্যা পরবর্তী সময়ে কোনও ধরনের রোগ যাতে মহামারির আকার ধারণ করতে না পারে তার জন্য প্ৰয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য বিভাগকে বলেছেন রাজ্যপাল।
সাম্প্ৰতিক বন্যায় কাজিরঙার ১৪১টি জীবজন্তুর মৃত্যু হয়েছে। এপর্যন্ত বন্যায় উদ্যানের ১২টি গন্ডার মারা গেছে। এছাড়া অন্যান্য আরও ৬৪টি বিভিন্ন প্ৰজাতির প্ৰাণী আহত হয়েছে। তবে এগুলোকে উদ্ধার করা গেছে। এই সব প্ৰাণীর মধ্যে ৫২টিকে ইতিমধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি প্ৰাণী মারা গেছে। বাকি ৮টি-র চিকিৎসা চলছে পানবাড়ির সিডব্লিউআরসিতে। উদ্যানের ভিতর নতুন করে নির্মাণ করা ৩৩টি উঁচু স্থান বন্যর সময় জীবজন্তুদের আশ্ৰয় নিতে সাহা্য্য করেছে। উদ্যানে থাকা পুরনো উঁচু স্থানগুলো এবার বন্যার জলে বেশকদিন ডুবে থাকে ব্ৰহ্মপুত্ৰ ও ডিফলু নদীর জলে।
বন্যায় যে ১২টি গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে সেগুলির মধ্যে দুটির মৃত্যু হয়েছে বন্যার জলে ডুবে। একটির মৃত্যু হয়েছে কার্বি পাহাড় থেকে নিচে গড়িয়ে পড়ায়। উদ্যানের একজন কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন,৩৭নং রাষ্ট্ৰীয় সড়ক পার হতে গিয়ে দ্ৰুতবেগী গাড়ির ধাক্কায় মারা গেছে ১৬টি বন্য প্ৰাণী। এর মধ্যে ১৫টি হরিণ,১টি সম্বর রয়েছে। দুই গন্ডার শাবককে উদ্যানের কাছের একটি গ্ৰাম থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসা করা হচ্ছে। উদ্যানের বিভিন্ন এলাকা এখনও জলের তলায় রয়েছে।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ গোলাঘাট জেলার ১,১৯,১৭৯ লক্ষের বেশি মানুষ বন্যার ক্ষতিগ্ৰস্ত,ভাসছে গোয়ালপাড়া,শিবসাগরের বহু গ্ৰাম