
বেঙ্গালুরুঃ দীর্ঘ নাটক ও টানাহ্যাঁচড়ার পর অবশেষে দক্ষিণী রাজ্য কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্ৰী এইচডি কুমারস্বামী আস্থা ভোটে হার মানলেন। মাত্ৰ ৬ ভোটের ব্যবধানে পরাস্ত হয়ে ক্ষমতাচ্যুত হতে হলো কুমারস্বামীকে। সেইসঙ্গে যবনিকা পড়লো কর্নাটকে পক্ষকাল ধরে চলা রাজনৈতিক সংকটের। গত ১৮ জুলাই কুমারস্বামীই আস্থাভোটের প্ৰস্তাব রেখেছিলেন। এই প্ৰস্তাব নিয়ে গত চারদিন ধরে তুমুল বিতর্ক ও টানা হ্যাঁচড়া চলে। অবশেষে মঙ্গলবার বিধানসভায় আস্থাভোট গ্ৰহণ করা হয়। বিধানসভায় আস্থা ভোট অর্জনের মরিয়া চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না কুমারস্বামী। এদিন আস্থা ভোটে কুমারস্বামীর নেতৃত্বাধীন কংগ্ৰেস-জনতা দল(এস)সরকারের পক্ষে ৯৯টি ভোট পড়ে। অন্যদিকে বিজেপি-র পক্ষে ভোট পড়ে ১০৫টি। আস্থাভোটে হেরে যাওয়ায় কর্নাটকে কংগ্ৰেস-জেডি(এস)সরকারের পতন ঘটে। বিধানসভার অধ্যক্ষ কে আর রমেশ আস্থা ভোটের পর বিধানসভায় সদস্যদের সামনে কুমারস্বামী সরকারের পতনের কথা জানান।
২২৫ সদস্যের কর্নাটক বিধানসভায় এদিন ২০ জন বিধায়ক আস্থা ভোটের সময় গরহাজির থাকেন। ফলে বিধানসভার সদস্য সংখ্যা হ্ৰাস পেয়ে ২০৪ জনে দাঁড়ায়। একক সংখ্যাগরিষ্ঠাতার জন্য প্ৰয়োজন ছিল ১০৩টি আসনের। ১০৫টি ভোট পেয়ে বিজেপি সেই যোগ্যতা অর্জন করে নেয়। ভারতীয় জনতা পার্টি(বিজেপি)কর্নাটকে পরবর্তী সরকার গড়ার জন্য বুধবার রাজ্যপাল বাজুভাই ভালার কাছে আর্জি জানবে। রাজ্য বিজেপি নেতা আর অশোক একথা জানান।
আস্থা ভোটে হেরে মুখ্যমন্ত্ৰী কুমারস্বামী গতকাল রাতে রাজ্যপাল ভালার সঙ্গে দেখা করে তাঁর পদত্যাগ পত্ৰ তুলে দিয়েছেন। তবে রাজ্যপাল ভালা পরবর্তী সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত কুমারস্বামীকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন। ১৪মাস ক্ষমতায় থাকার পরই কর্নাটকে কংগ্ৰেস জনতা দল(এস)জোট সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হলো। এদিন বিধানসভায় কুমারস্বামীর আস্থা ভোটে হারের পর মুখ্যমন্ত্ৰীর দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বিরোধী নেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পা।
কংগ্ৰেস হুইপ জারি করা সত্ত্বেও বিধানসভায় গরহাজির থাকেন ১৫ জন বিক্ষুব্ধ কংগ্ৰেস-জনতা দল(এস)বিধায়ক। সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেওয়া দুই নির্দল বিধায়কও আস্থাভোটে অংশ নেননি। বিএসপির একমাত্ৰ বিধায়ক এন মহেশও ভোটদান করেননি। তবে এবার সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে কর্নাটকে সরকার গড়তে চলেছে এনডিএ। কুমার স্বামীর নেতৃত্ব অসন্তুষ্ট হয়ে ১৩ জন কংগ্ৰেস ও ৩ জন জনতা দল(এস)এর বিক্ষুব্ধ বিধায়ক গত ১ থেকে ১০ জুলাইয়ের মধ্যে পদত্যাগ করায় রাজ্যে রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত হয়। বরিষ্ঠ কংগ্ৰেস নেতা এবং প্ৰাক্তন মন্ত্ৰী আর রামালিঙ্গা রেড্ডি তাঁর পদত্যাগ পত্ৰ প্ৰত্যাহার করে মঙ্গলবার আস্থা ভোটের পক্ষেই ভোট দেন। বিদ্ৰোহী বিধায়ক এবং দুজন নির্দল সদস্য তাদের পদত্যাগপত্ৰ প্ৰত্যাহার করতে অস্বীকার করায় কুমারস্বামী বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন বলে বিজেপি তাঁর পদত্যাগের দাবি তুলেছিল। বিক্ষুব্ধ বিধায়ক ও দুই নির্দল ও বিএসপির একজন বিধায়ক বেঁকে বসায় কুমারস্বামী সরকারের পতন অবধারিত হয়ে পড়ে।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ কর্নাটকের বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের মামলা মেটাতে অধ্যক্ষকে নির্দেশ সুপ্ৰিমকোর্টের