লোকসভায় পাস নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব)২০১৯

লোকসভায় পাস নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব)২০১৯

নয়াদিল্লিঃ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব)২০১৯ নিয়ে সোমবার বিরোধীদের আপত্তি ও ১২ ঘন্টা বিতর্কের পর মঙ্গলবার অনেক রাতে বিলটি লোকসভায় পাস হয়ে যায়। বিলের পক্ষে ৩১১টি এবং বিপক্ষে ৮০টি ভোট পড়ে। স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী অমিত শাহ বিল নিয়ে বিরোধীদের প্ৰশ্নের জবাব দেওয়ার পর লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা বিল নিয়ে ভোটাভুটির প্ৰস্তাব দেন। স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী শাহ এর আগে সোমবার দুপুরে বিলটি লোকসভায় তোলার আগে প্ৰচণ্ড হৈ হল্লা শুরু হয়। বিরোধীদের তীব্ৰ প্ৰতিবাদের মুখে পড়ে অধ্যক্ষ ওম বিড়লা ভোটাভুটির মাধ্যমে বিলটি উপস্থাপন করা যাবে কিনা তার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময় বিল আনার পক্ষে সায় দেন ২৯৩ জন সাংসদ এবং ৮২ জন দেন বিপক্ষে ভোট। আজ বিলটি রাজ্যসভায় তোলা হতে পারে। উল্লেখ্য,কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰিসভা গত বুধবার ক্যাব অনুমোদন করেছিল।

সোমবার এক প্ৰশ্নের জবাবে শাহ বলেছেন,রোহিঙ্গাদের কখনোই ভারতীয় নাগরিক হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তারা বাংলাদেশ হয়ে ভারতে অনুপ্ৰবেশ করেছে। তারা এসেছে মায়ানমার থেকে-বলেন শাহ। স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী আরও বলেন,আমরা সংবিধানের ৩৭১ অনুচ্ছেদে কখনো হাতই দেবো না। ৩৭০ এবং ৩৭১ অনুচ্ছেদের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে-বলেন তিনি। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে আশ্বস্ত করে স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী বলেন,৩৭১ অনুচ্ছেদের অধীনে উত্তরপূর্বের অধিকাংশ রাজ্য বিশেষ মর্যাদা ভোগ করছে। উপজাতিদের সংস্কৃতি রক্ষার লক্ষ্যেই ওই বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তাঁর মতে,বিল অনু্যায়ী,ইনারলাইন পারমিট থাকা রাজ্যগুলোতে ক্যাব প্ৰযোজ্য হবে না। তাছাড়া সংবিধানের ষষ্ঠ অনুচ্ছেদের অধীনস্থ এলাকাগুলোও এই সংশোধিত আইনের আওতায় থাকবে না। অসমের বোড়োল্যান্ড,কার্বি আংলং এবং ডিমাসা স্বশাসিত অঞ্চলগুলিতে প্ৰযোজ্য হবে না এই সংশোধিত আইন। ত্ৰিপুরা ও মেঘালয়ের যে সব এলাকা ষষ্ঠ অনুচ্ছেদের অধীনে রয়েছে সেগুলোও ক্যাবের আওতায় আসবে না।

নাগরিকত্ব বিল ভারতীয় মুসলিমদের ওপরও কোনও প্ৰভাব ফেলবে না-বলেন শাহ। স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী আরও বলেছেন দেশজুড়ে রাষ্ট্ৰীয় নাগরিক পঞ্জি(এনআরসি)চালু করা হবে। ‘আমি আশ্বাস দিচ্ছি-এই বিলে কোনও বিচ্ছিন্নতার নামগন্ধ নেই এবং এটি সংবিধানের কোনও অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করছে না’।

স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী বলেন,পাকিস্তান,আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশে ধর্মীয় উৎপীড়নের শিকার হয়ে এদেশে পালিয়ে আসা হিন্দু,খ্ৰিস্টান,পার্শি,জৈন,শিখ এবং বৌদ্ধদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দিতে চাওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন,পাকিস্তান,আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের সংবিবিধান বিশ্লেষণ করার পরই বিলটি আনা হয়েছে। শাহ বলেন,‘আমি এই আশ্বাস দিচ্ছি এই বিলের জন্য কোনও নাগরিক তার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না। ভারত ও পাকিস্তান বিভাজিত হওয়ার পর ১৯৫০ সালে নেহরু-লিয়াকত আলি খানের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিটির প্ৰসঙ্গ উত্থাপন করে শাহ বলেন,ওই চুক্তিতে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় সম্মতি প্ৰকাশ করা হয়েছিল। ভারত সেটা মেনেছে। কিন্তু পাকিস্তান আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে থাকা হিন্দু,খ্ৰিস্টান,শিখ,পার্শি,জৈন ও বৌদ্ধরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এই সমস্ত ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতিত মানুষের জন্যই আনা হয়েছে এই বিল। যুক্তিপূর্ণভাবে বিচার বিবেচনা করেই এদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। বিল সংবিধানের ১৪ অনুচ্ছেদ কোনওভাবেই লঙ্ঘন করছে না-বলেন তিনি। ওই সব দেশে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যারা এদেশে এসেছেন তাদেরই নাগরিকত্ব দিতে চাওয়া হয়েছে বিলে-বলেন শাহ।

অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ অতুল বরার বাড়ি ঘেরাও এসএমএসএস-এর,আটক ৫

অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: AASU hangs effigies of State Ministers in Kokrajhar against CAB

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com