ক্যাব উত্তরপূর্বের অস্তিত্বে কোনও আঘাত হানবে নাঃ অমিত

ক্যাব উত্তরপূর্বের অস্তিত্বে কোনও আঘাত হানবে নাঃ অমিত
Published on

গুয়াহাটিঃ স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী অমিত শাহ সোমবার এখানে বলেছেন,নাগরিকত্ব(সংশোধনী)বিল(ক্যাব)উত্তর পূর্বাঞ্চলের স্থানীয় মানুষের সাংস্কৃতিক ও জাতিগত অস্তিত্বের রক্ষাকবচ হিসেবে থাকা বর্তমান আইন ও সেইসঙ্গে ৩৭১ ধারার ওপর কোনও আঘাত হানবে না।

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল(ক্যাব)আইনে পরিণত হলে এই অঞ্চলের স্থানীয় মানুষের জীবনে চরম হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মেঘালয়,মিজোরাম ও নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্ৰীরা ভয় ও আশঙ্কা ব্যক্ত করার পরিপ্ৰেক্ষিতেই এই মন্তব্য করেন স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী। সোমবার শাহ এখানে উত্তর পূর্ব গণতান্ত্ৰিক জোটের(এনইডিএ)চতুর্থ সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছিলেন।

‘সংবিধানের ৩৭১ ধারায় উত্তর পূর্বাঞ্চলের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা মঞ্জুর করা হয়েছে এবং এটা এই অঞ্চলের মানুষের অধিকারও বটে। তাই ক্যাব কোনওভাবেই ৩৭১ ধারাকে ক্ষুণ্ণ করবে না। এছাড়াও উত্তর পূর্বাঞ্চলের মানুষের সাংস্কৃতিক ও জাতিগত অস্তিত্বের রক্ষাকবচ হিসেবে বর্তমানে যে আইন রয়েছে সেই বিষয়গুলোকে স্পর্শই করবে না ক্যাব’। নেডার সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে কথাগুলো বলেন শাহ। স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী বলেন,ক্যাবের জন্য কাট অফ ডেট ধার্য হয়েছে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর এবং উল্লিখিত এই তারিখের মধ্যে যে সব মানুষ ভারতে এসেছেন শুধু তাদের বিষয়টিই দেখা হবে।

অসমে চূড়ান্ত এনআরসি থেকে বাদ পড়া লোকেরা পড়শি রাজ্যগুলোতে ঢোকার সম্ভাবনা সম্পর্কে শাহ বলেন,কেন্দ্ৰ শুধু অসমেই নয়,সারা দেশ থেকে অবৈধ প্ৰব্ৰজনকারীদের বহিষ্কার করতে চাইছে।

এরআগে নেডার সম্মেলনে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্ৰী কনরাড সাংমা নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উদ্বেগ প্ৰকাশ করেন। এই বিল নিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চলে একটা ভীতি রয়েছে। তবে সাংমা বিলটি আনার আগে উত্তর পূর্বাঞ্চলের সব রাজ্যকে আস্থায় নিতে স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰীর কাছে আর্জি জানান। বিলটি উত্থাপনের আগে কেন্দ্ৰ এই অঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে আলোচনা এড়িয়ে যাবে কিনা-সেই প্ৰশ্নও তোলেন সাংমা। ক্যাবের পর কি ঘটবে? বাংলাদেশ থেকে মানুষের স্ৰোত বইবে কি? উত্তর পূর্বের মানুষের মধ্যে এজাতীয় কিছু ভয়-ভীতি কাজ করছে-বলেন সাংমা। তিনি এই ইস্যু নিয়ে একটা ঐকমত্যে পৌঁছতে সব দাবিদারদের সঙ্গে আলোচনার জন্য কেন্দ্ৰের প্ৰতি ফের আহ্বান জানান।

নেডার সম্মেলনে নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্ৰী নেইফিউ রিও বলেন,‘আমরা মনে করি অত্যন্ত বিতর্কিত ক্যাব উত্তরপুরের জনবিন্যাসই পাল্টে দিতে পারে কেন্দ্ৰ যদি সেটা রূপায়ণ করে। আমাদের বাস্তব পরিস্থিতি বোঝার প্ৰয়োজন রয়েছে’-বলেন রিও। তিনি আশার সুরে বলেন,‘শাহ এবং কেন্দ্ৰীয় সরকার আমাদের কথা শুনবেন’।

মিজোরামের মুখ্যমন্ত্ৰী জোরামথাঙ্গা ক্যাবের আওতা থেকে উত্তর পূর্বাঞ্চলকে বাদ দিতে স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰীকে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন,কোনও রাজনৈতিক দল এই বিল সমর্থন করলে সেটা ‘আত্মহত্যারই তুল্য হবে’।

বিলটি যদি রূপায়ণ করতেই হয় তাহলে অনুগ্ৰহ করে উত্তর পূর্বাঞ্চলকে এর আওতা থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি দেখুন। ওই অঞ্চলের স্পর্শকাতরতার প্ৰতি লক্ষ্য রেখেই আমি আপনাকে এই অনুরোধ জানাচ্ছি। ক্যাব অত্যন্ত স্পর্শকাতর ইস্যু। অধিকাংশ রাজ্যে যেখানে রাজনৈতিক দলগুলি এটাকে সমর্থন করছে তারা আসলে আত্মঘাতী পথই বেছে নিচ্ছে-বলেন জোরামথাঙ্গা।

এদিকে নেডার আহ্বায়ক হিমন্তবিশ্ব শর্মা সোমবার সাংবাদিকদের বলেন,স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী শাহ আট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰীদের আশ্বাস দিয়েছেন,প্ৰস্তাবিত ক্যাব কোনও ভাবেই ষষ্ঠ তফশিল,ইনার লাইন পারমিট এবং মেঘালয় রেসিডেন্টস সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো রাজ্য আইনের বিধি ব্যবস্থাকে লঙ্ঘন করবে না। ‘প্ৰস্তাবিত ক্যাব উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক,ভাষিক এবং অন্যান্য অধিকার সংরক্ষণে বর্তমানে থাকা সব আইন,নীতিনিয়ম এবং রাজ্য আইনগুলোকে লঙ্ঘন করবে না’।

অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Renovation work carried out at ancient Jame Masjid Minaret in Nagaon

logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com