মাত্ৰ ৩০ টাকা চেয়ে স্বামীর প্ৰহার ও তিন তালাক শুনতে হলো নয়ড়ার এক মহিলাকে

নয়ডাঃ স্বামীর কাছে মাত্ৰ ৩০ টাকা চেয়েছিলেন স্ত্ৰী। টাকাটা নিজের জন্য নয়,পরিবারের সবার পেট ভরাতেই। সব্জি কিনার জন্য। কিন্তু টাকা চাওয়াটাই কাল হলো ওই মহিলার। বিপরীতে জুটলো মার,কিল,ঘুষি। হেনস্তা,অপমান। ওখানেই রফা হলো না ঘটনার। ক্ৰুদ্ধ স্বামী মেজাজ হারিয়ে বীরদর্পে শুনিয়ে দিলেন তালাক,তালাক,তালাক। ওখানেই বিবাহিত জীবনের ইতি। শরিয়ত আইন তো তেমন কথাই বলে। ঘটনা নয়ডার এক অভাগী মুসলিম মহিলার। মামুলি একটা কারণ নিয়ে এমন একটা বিশ্ৰী ঘ্টনা ঘটে যেতে পারে তা যেন ভাবাই যায় না। ভুক্তভোগী মহিলার নাম জয়নাব। জয়নাবের অভিযোগ,‘সব্জি কেনার জন্য স্বামী সাবির-এর(৩২)কাছে মাত্ৰ ৩০ টাকা চেয়েছিলাম। কিন্তু তাতেই বিপত্তি বাধে’। সাবির চটে গিয়ে আমাকে প্ৰহার করতে শুরু করে। আঘাত করে স্ক্ৰুডাইভার দিয়ে। পরপক্ষেই ক্ৰোধের বসে তিন তালাক শুনিয়ে দেয় সাবির’। সাবিরের পরিবারের লোকেরাও একই আচরণ করেছেন। উঠতে বসতে তাকে গঞ্জনার শিকার হতে হয়েছে বলে জয়নাব অভিযোগ করেছেন।
জয়নাবের বাবা মুরসেলিম বলেন,‘আমরা জয়নাবকে কিছু অলংকার দিয়েছিলাম। কিন্তু শ্বশুর বাড়ির লোকেরা সেগুলিও চেয়েছিল। কিন্তু জয়নাব অলংকার দিতে অস্বীকার করায় তার শ্বশুর পর্যন্ত তাঁকে ছেড়ে দেয়নি,মারধর পর্যন্ত করেছে। এমনকি ওই সময় বাড়িতে পাড়া পড়শিদের ঢুকতে পর্যন্ত দেয়নি শ্বশুর বাড়ির লোকেরা।
বাবা মুরসেলিম আরও অভিযোগ করেন জয়নাবের শাশুড়ি নাজো ঘটনার সময় জয়নাবের কানের দুল পর্যন্ত ছিনিয়ে নেওয়ায় চেষ্টা করেছে। কিন্তু জয়নাব ওই অলংকারগুলো তাঁর বাবার দেওয়া বলে জোর প্ৰতিবাদ করে। মুরসেলিম আরও অভিযোগ করেন,বিয়ের পর থেকে ওর দেওর পর্যন্ত জয়নাবের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে এসেছে।
জয়নাব ও সাবিরের বিয়ের নয় বছর পূর্ণ হয়েছে। তাদের ৪টি সন্তানও রয়েছে। তিনি বলেন,দুবছর আগে লাঠি দিয়ে সাবির জয়নাবের মাথায় আঘাত করেছিল। বাড়ির অন্য সদস্যরাও জয়নাবকে দুর্ব্যবহার করতো লাগাতার। জয়নাবের ওপর নির্যাতনের মাত্ৰা দিন দিনই বাড়ছিল-অভি্যোগ করেন মুরসেলিম।
তার মেয়ে সঙ্গে আরও একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে মুরসেলিম বলেন,অসুস্থ হয়ে তাঁর মেয়ে কয়েকদিন আগে বাপের বাড়িতে থাকতে এসেছিল। কিন্তু বাপের বাড়িতে একটু সুস্থ হয়ে ফিরে যায় সে। এরপরই স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকেরা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে শুরু করে। তার স্বামী সাবির প্ৰায়ই শোনাতো সে বিবাহ বিচ্ছেদ চায়।
এই ঘটনার পর সাবির তার মা নাজো,বোন সামার বিরুদ্ধে একটি মামলা ঠুকেছে জয়নাব এবং তার বাপের বাড়ির পরিবার। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ,৫০৪ এবং ৫০৬ ধারায় ওই মামলাটি রুজু করেছে জয়নাব।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ বিরোধীদের প্ৰতিবাদের মধ্যেই ফের তিন তালাক বিল লোকসভায় পেশ