প্ৰকাশের পর এনআরসি-র নথি পুনঃপরীক্ষার আর্জি রাজ্য বিজেপির

প্ৰকাশের পর এনআরসি-র নথি পুনঃপরীক্ষার আর্জি রাজ্য বিজেপির

গুয়াহাটিঃ চূড়ান্ত রাষ্ট্ৰীয় নাগরিক পঞ্জি(এনআরসি)প্ৰকাশের হাতে মাত্ৰ আর চারদিন বাকি। তবে প্ৰদেশ বিজেপি চূড়ান্ত এনআরসি প্ৰকাশের পর এনআরসি আবেদনকারীরা যে সব নথিপত্ৰ দাখিল করেছেন সেগুলো পুনরায় পরীক্ষা করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে। নাগরিক পঞ্জি পুনরায় পরীক্ষা করার একটা সম্ভাবনাও দেখতে পাচ্ছে বিজেপির রাজ্য শাখা। এনআরসি-র কাজ শেষ করে চূড়ান্ত তালিকা রেজিস্ট্ৰার জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার(আরজিআই)হাতে তুলে দেবেন এনআরসির রাজ্য সমন্বয়ক প্ৰতীক হাজেলা। আরজিআই-ই চূড়ান্ত তালিকা সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তি জারি করার কথা। আর তখনই নাগরিক পঞ্জি হবে রাজ্য সরকারের সম্পত্তি। সেই সময়ই নাগরিক পঞ্জির সমস্ত নথিপত্ৰ ফের পরীক্ষা করে দেখার পথ প্ৰশস্ত করবে সরকারের সামনে।

সোমবার গুয়াহাটিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রঞ্জিৎ কুমার দাস বলেন,‘চলতি বছরের ৩১ আগস্ট যে চূড়ান্ত নাগরিক পঞ্জি প্ৰকাশ হচ্ছে,তা কতটা নিখুঁত ও নির্ভুল হবে সেব্যাপারে সন্দঽ থেকেই যাচ্ছে। অনেক বিদেশিয় নাম এনআরসিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে,তেমনি বহু প্ৰকৃত ভারতীয়র নাম বাদ পড়েছে। যেখানে ভারতীয় সেনা,স্বাধীনতা সংগ্ৰামীর পরিবারের সদস্য এবং অসম আন্দোলনে জড়িতদের পরিবারের সদস্যদের নাম বাদ পড়েছে সেই এনআরসি নিয়ে আমরা কি করে সন্তুষ্টি হতে পারি?

আরজিআই-এর কাছে চূড়ান্ত এনআরসি দাখিল হওয়ার পর সেটি রাজ্যের বিষয় হয়ে যাবে। তখন এনআরসি আবেদনকারীদের নথিপত্ৰ খতিয়ে দেখা রাজ্য সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে। এনআরসি থেকে বহু প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিকের নাম বাদ পড়েছে। এব্যাপারে আমরা বিধানসভায় আইন প্ৰণয়ন করে অথবা সংসদে আইন সংশোধন করে বিহিত ব্যবস্থা গ্ৰহণের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। চূড়ান্ত খসড়ায় যে সব সন্দেহভাজন বিদেশির নাম ঠাঁই পেয়েছে আমরা রাজ্য ও কেন্দ্ৰীয় সরকারকে তাদের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য তাদের আবেদন জানাচ্ছি। সন্দেহভাজন বিদেশিদের ক্ষেত্ৰে তদন্ত প্ৰক্ৰিয়া চালাতেও আমরা কেন্দ্ৰ ও রাজ্য সরকারকে তদন্ত প্ৰক্ৰিয়া চালাতে অনুরোধ জানাচ্ছি। দাস বলেন,এনআরসি কাজ নিয়ে আমরা খুশি নই। এর আগেও ‘আমরা মানুষের স্বার্থে রি-ভেরিফিকেশনের আর্জি জানিয়েছিলাম। কিন্তু এনআরসির রাজ্য সমন্বয়ক প্ৰতীক হাজেলা সুপ্ৰিম কোর্টকে জানান ২৭ শতাংশ রি-ভেরিফিকেশন হয়ে গেছে। তাই এর আর প্ৰয়োজন নেই। এরফলে সরকারের সমস্ত আর্জি বুমেরাং হয়ে যায়। সুপ্ৰিমকোর্টের নির্দেশে এনআরসি প্ৰক্ৰিয়ায় রাজ্য ও কেন্দ্ৰকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। নাগরিক পঞ্জিতে বিদেশির নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ব্যাপারেও সংশয় ব্যক্ত করেন তিনি। আর এজন্যই নাগরিক পঞ্জি প্ৰকাশের পর সন্দেহভাজন লোকেদের নথিপত্ৰ ফের যাচাই করার কথা বলছে বিজেপি।

দাস আরও বলেন,এনআরসির রাজ্য সমন্বয়ক হাজেলা কিছু দল,সংগঠন ও নিজস্ব ইচ্ছার দ্বারা পরিচালিত হয়েছেন। তাই যে এনআরসি প্ৰকাশিত হতে যাচ্ছে তা কতটা নির্ভুল হবে সেই ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। নির্ভুল একটা এনআরসির জন্য রাজ্য ও কেন্দ্ৰ সরকার ১০-২০ শতাংশ রি-ভেরিফিকেশনের দাবি জানিয়েছিল। ওই দাবিকে পাত্তাই দেওয়া হয়নি। হাজেলা সুপ্ৰিম কোর্টকে জানান ২৭ শতাংশ রিভেরিফিকেশন হয়ে গেছে। তাই এর আর প্ৰয়োজন পড়বে না। আবেদনকারীদের নথিপত্ৰগুলোর সরকারিভাবে কোনও পরীক্ষা করা হয়নি-বলেন দাস। দাস আরও বলেন,এনআরসি নবায়নের কাজে সুপারিশ পেশ করা নির্বাচিত রাজ্য সরকারের অধিকার ছিল। কিন্তু সুপ্ৰিমকোর্ট তাতে হস্তক্ষেপ করার সু্যোগই দেয়নি। তিনি বলেন,খসড়া প্ৰকাশের পর সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নথিপত্ৰ ফের পরীক্ষায় প্ৰয়োজন রয়েছে এবং সেব্যাপারে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিজেপি সভাপতির আরও অভি্যোগ,এনআরসির আবেদন নিয়ে শুনানির সময় বহু অফিসার নথিপত্ৰ পরীক্ষার সময় বিদেশিদের স্বদেশীর তকমা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন,বিজেপি একটা শুদ্ধ নাগরিক পঞ্জি চায়। তিনি বলেন,সরকার এনআরসি খাতে ১২০০ কোটি টাকা খরচ করেছে। এটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো একজন প্ৰকৃত ভারতীয় নাগরিক যদি বাদ পড়ে তাহলে তার মূল্য বারোটি কোটিরও বেশি বলে দল মনে করে।

অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: Rain lashes major places of Guwahati city

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com