রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ জমি বিরোধ মামলা চলছিল ১৫২৮-২০১৯ পর্যন্ত

রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ জমি বিরোধ মামলা চলছিল ১৫২৮-২০১৯ পর্যন্ত

নয়াদিল্লিঃ অযোধ্যার বিতর্কিত রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ জমি বিরোধ নিয়ে দেশের শীর্ষ আদালত শনিবার চূড়ান্ত রায়দান করলো। সুপ্ৰিমকোর্ট অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমির পুরোটাই রামলালার ভক্তদের জন্য মঞ্জুর করেছে।

১৫২৮ সালে বিতর্কিত স্থানে বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন মুঘল সম্ৰাটের কমান্ডার মীর বাকি।

১৮৮৫ সালে মহন্ত রঘুবীর দাস বিতর্কিত কাঠামোর বাইরে একটি শামিয়ানা নির্মাণের অনুমতি চেয়ে ফৈজাবাদ জেলা আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন। পরে কোর্ট ওই প্ৰস্তাবটি খারিজ করে দেয়।

১৮৪৯ সালে বিতর্কিত কাঠামোর বাইরে একটি স্থানে রামলালার মূর্তি স্থাপন করা হয়েছিল।

১৯৫০ সালে গোপাল সিমলা বিশারদ রামলালার পূজার অধিকার চেয়ে ফৈজাবাদ জেলা আদালতে একটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন।

পরমহংস রামচন্দ্ৰ দাস ওই স্থানে পূজা ও মূর্তি রাখার আবেদন জানিয়ে মামলা করেছিলেন আদালতে। ১৯৫৯ সালে নিরোমণি আখড়া জমির অধিকার চেয়ে মামলা করেছিলেন।

১৯৬১ সালে ইউপি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড বিতর্কিত জমির অধিকার চেয়ে মামলা করেছিল।

১৯৮৬ সালের ১ ফেব্ৰুয়ারিঃ স্থানীয় আদালত সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল ওই স্থান হিন্দুদের পূজা অর্চনার জন্য খুলে দিতে। ১৯৮৯ সালের ১৪ আগস্ট এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত কাঠামো নিয়ে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছিল।

১৯৯২ সালে ৬ ডিসেম্বরঃ বাবরি মসজিদ গুড়িয়ে দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালের ৩ এপ্ৰিল বিতর্কিত জমির কিছু অংশ যাতে কেন্দ্ৰ অধিগ্ৰহণ করতে পারে তার জন্য ‘অ্যাকুইজেশন অফ সার্টেন এরিয়া অ্যাট অযোধ্যা অ্যাক্ট পান করা হয়েছিল।

এই আইনের বিভিন্ন দিক নিয়ে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জনৈক ইসলাম ফারুকি সহ বিভিন্ন জন এলাহাবাদ হাইকোর্টে বিভিন্ন রিট পিটিশন দাখিল করেন। তবে সুপ্ৰিমকোর্ট তার ক্ষমতা বলে হাইকোর্টে ঝুলে থাকা এই রিট পিটিশন সংবিধানের ১৩৯এ-র অধীন নিজেদের এক্তিয়ারে দেয়।

১৯৯৪ সালের ২৪ অক্টোবর সুপ্ৰিমকোর্ট ঐতিহাসিক ইসমাইল আলি ফারুকি মামলা সম্পর্কে এক রায়ে বলেছিল মসজিদের সঙ্গে ইসলামের কোনও অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক নেই।

২০০২ সালের এপ্ৰিলে বিতর্কিত জমির অধিকারী কারা হবে তা নির্ধারণে হাইকোর্ট শুনানি শুরু করে।

২০০৩ এর ১৩ মার্চ সুপ্ৰিম কোর্ট আসলাম ওরফে ভুরে মামলা নিয়ে বলেছিল,অধিগৃহীত জমিতে কোনও ধরনের ধর্মীয় কার্যকলাপ চলতে দেওয়া হবে না।

২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিতর্কিত জমি সুন্নি ওয়াকক বোর্ড,নিরোমণি আখড়া এবং রামলালার মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়ার রায় দেয়।

এরপর ২০১১-র ৯ মে সুপ্ৰিম কোর্ট অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে।

২০১৭ সালের ২১ মার্চ সিজেআই জেএস খেহর প্ৰতিদ্বন্দ্বী দলগুলোকে কোর্টের বাইরে এই মামলার নিষ্পত্তি করার সুপারিশ করেছিলেন।

১৯৯০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দাখিল করা পিটিশনগুলির শুনানির জন্য সুপ্ৰিম কোর্ট ৩ সদস্যের বেঞ্চ গঠন করে। ২০১৮-র ৮ ফেব্ৰুয়ারি থেকে সিভিল আপিলগুলো নিয়ে শুনানি শুরু করে সুপ্ৰিমকোর্ট। তবে রায়দান স্থগিত রাখে। এরপর মামলাটি পরিচালনায় পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ গঠন করা হয়।

২০১৯-এর ৪ জানুয়ারি থেকে সুপ্ৰিমকোর্ট মামলার শুনানি গ্ৰহণের সিদ্ধান্ত নেয়।

এরপর ৮ জানুয়ারি মুখ্য বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বে গঠিত হয় ৫ সদস্যের বেঞ্চ। বেঞ্চের অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন বিচারপতি এসএ বোবদে,এনভি রামান্না,ইউ ইউ ললিত এবং ডিওয়াই চন্দ্ৰচূড়। কিন্তু বিচারপতি ললিত মামলা থেকে সরে দাঁড়ান। ফলে ২৫ জানুয়ারি পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়। মুখ্য বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ছাড়াও এই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি এসএ বোবদে,ডিওয়াই চন্ডচূড়,অশোক ভূষণ ও এসএ নাজির।

এরপর ২৯ জানুয়ারি বিতর্কিত স্থানের অধিগৃহীত ৬৭ একর জমি মূল স্বত্ত্বাধিকারীদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে অনুমতি চেয়ে দ্বারস্থ হয় কেন্দ্ৰ। তারপর ১৬ অক্টোবর মামলার ৪০ দিন ব্যাপী শুনানি গ্ৰহণ শেষে সুপ্ৰিম কোর্ট রায় দান স্থগিত রেখেছিল। শুনানি শেষে সুপ্ৰিমকোর্ট সব পক্ষকে তাদের মতামত লিখিতভাবে দাখিল করারও নির্দেশ দিয়েছিল। তবে আজ ৯ ডিসেম্বর মামলার চূড়ান্ত রায় দান পরে সুপ্ৰিমকোর্ট। রায়ে অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি রামলালার ভক্তদের জন্য মঞ্জুর করা হয়। বলা হয়,জমির অধিকার কেন্দ্ৰের হাতে থাকবে। কোর্ট ইউপিও কেন্দ্ৰীয় সরকারকে উপযুক্ত স্থানে পাঁচ একর জমি মুসলিমদের জন্য বরাদ্দ করার নির্দেশ দিয়েছে।

অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: CM Sonowal inaugurates National Livestock and Poultry Show 2019

Related Stories

No stories found.
logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com