কাছাড় ও নগাঁও কাগজ কল পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল

শিলচরঃ হিন্দুস্তান পেপার কর্পোরেশনের কাছাড় এবং নগাঁও কাগজ কল দুটি পুনরায় খোলার সম্ভাবনা নিয়ে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। দিশপুরে গত বুধবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰী সর্বানন্দ সোনোয়াল ও ট্ৰেড ইউনিয়নের নেতাদের মধ্যে ইস্যুটি নিয়ে আলোচনার পর কাগজ কল দুটি পুনরুজ্জীবিত করার সম্ভাবনা দেখা গেছে।
মুখ্যমন্ত্ৰী সোনোয়াল ওই বৈঠকে ট্ৰেড ইউনিয়ন নেতাদের এই আশ্বাস দিয়েছেন যে খুব শিগগিরই এই ইস্যুটি তিনি প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদির দরবারে তুলবেন। কল দুটি পুনরুজ্জীবিত করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে তিনি প্ৰধানমন্ত্ৰীকে বোঝাবার চেষ্টা করবেন। ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্ৰাইবুনাল(এনসিএলএটি)চলতি বছরের ২৯ মে মিল দুটো বিক্ৰি না করে পূর্বের মতো উৎপাদন চালু করতে সক্ৰিয় ব্যবস্থা গ্ৰহণের জন্য ভারত সরকারকে নির্দেশ দেওয়ার পরিপ্ৰেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্ৰীর সঙ্গে ট্ৰেড ইউনিয়নের নেতাদের এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এনসিএলএটি কেন্দ্ৰীয় সরকারকে কল দুটোর কর্মীদের বকেয়া বেতন ও অন্যান্য বিধিসন্মত প্ৰাপ্তগুলো মিটিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্ৰীয় সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে।
পাঁচগ্ৰাম ও জাগিরোড কাগজ কলের কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পাওয়ায় দুর্বিষহ জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। অর্থাভাবে জর্জরিত কর্মীরা তাদের পরিবারের ভরণপোষণ চালাতে পারছেন না। কলের যে সব কর্মীর ছেলে মেয়েরা বাইরে পড়া শোনার জন্য গিয়েছিল তাদের পড়াশোনা লাটে উঠেছে। চরম অর্থ সংকট ও ঋণভাবে জর্জরিত হয়ে মিল দুটোর কয়েকজন কর্মী ইতিমধ্যেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। এই বৈঠকে ট্ৰেড ইউনিয়নের নেতারা মিলের কর্মীদের মানসিক ও শারীরিক দুরবস্থা এবং তাদের পরিবারগুলোর করুণ কাহিনি মুখ্যমন্ত্ৰীর কাছে সবিস্তারে তুলে ধরেছেন। চরম আর্থিক সংকট ও ঋণের দায়ে এপর্যন্ত ৫৫ জন মিল কর্মীর মৃত্যুর কথাও মুখ্যমন্ত্ৰীকে জানিয়েছেন ইউনিয়নের নেতারা।
কল দুটো যাতে পুরোপুরি বেসরকারি মালিকানার হাতে কেন্দ্ৰ তুলে না দেয় সেদিকটির প্ৰতি নজর রাখতে ইউনিয়ন নেতারা মুখ্যমন্ত্ৰীকে অনুরোধ করেছেন। এমনটা হলে এগুলোর পরিণতিও যোগিঘোপার অশোক কাগজ কলের মতোই হবে বলে মনে করে ইউনিয়ন।
সিটিজেনস ফোরামের ব্যানারে ইউনিয়নের যে সব নেতারা মুখ্যমন্ত্ৰীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন ইনটাক,নগাঁও পেপার মিলের সাধারণ সম্পাদক আনন্দ বরদলৈ,ইনটাক,কাছাড় কাগজ কলের সভাপতি এবং আহ্বায়ক মানবেন্দ্ৰ চক্ৰবর্তী। এছাড়াও ছিলেন অনুপ চেতিয়া,দিলীপ পাটগিরি,লাচিত বরদলৈ এবং মনোরঞ্জন বরা প্ৰমুখ। তাঁরা বলেন,কল দুটো পুনরুজ্জীবিত হলে কর্মীরা আবার জীবন ফিরে পাবেন এবং সেই সঙ্গে রাজ্যে শিল্পায়ন ও অর্থনীতির ভিত গড়ে উঠবে।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ অসমের দুটি কাগজ কল পুনরুজ্জীবিত করা নিয়ে বিজেপি সাংসদদের আশ্বাস কেন্দ্ৰের