গুয়াহাটিঃ চূড়ান্ত রাষ্ট্ৰীয় নাগরিক পঞ্জি(এনআরসি)প্ৰকাশের পরিপ্ৰেক্ষিতে রাজ্যের গৃহ ও রাজনৈতিক বিভাগ তাদের পূর্বের দুটি সিদ্ধান্ত পর্যালোচনা করেছে। বিভাগটি এখন রাজ্যের ৩৩টি জেলায় ২০০টি অতিরিক্ত নতুন বিদেশি ট্ৰাইবুনাল(এফটি)স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অতিরিক্ত বিদেশি ট্ৰাইবুনাল স্থাপনের জন্য জেলাশাসকদের সংশ্লিষ্ট প্ৰয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে একটি তালিকা দাখিল করতে বলা হয়েছে।
ইতিপূর্বে এইসব অতিরিক্ত বিদেশি ট্ৰাইবুনাল শুধু রাজ্যের ৮টি জেলায় স্থাপনের কথা ছিল। বিভাগটি আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে,চূড়ান্ত এনআরসি থেকে নাম ছুট ব্যক্তিরা বর্তমানে থাকা ১০০টি বিদেশি ট্ৰাইবুনালের যেকোনও একটিতে আপিল করতে পারবেন। পূর্বে,এধরনের আপিল জানানোর ব্যবস্থা কয়েকটি ডেজিগনেটেড এফটি-র মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
অতিরিক্ত মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণের(গৃহ ও রাজনৈতিক বিভাগ)পৌরোহিত্যে সোমবার অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠকে এই নতুন সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়। গৃহ ও রাজনৈতিক বিভাগের কমিশনার ও সচিব আশুতোষ অগ্নিহোত্ৰী,অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ(সীমান্ত শাখা)ভাস্করজ্যোতি মহন্ত এবং বিভাগের অন্যান্য বরিষ্ঠ কর্মকর্তারা বৈঠকে উস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সঞ্জয় কৃষ্ণ দ্য সেন্টিনেলকে বলেন,‘এনআরসি প্ৰকাশের পরবর্তী পরিস্থিতির ব্যবস্থাপনায় আমরা রোডম্যাপ প্ৰস্তুত করেছি’। তিনি আরও বলেন,‘২০০ টি অতিরিক্ত বিদেশি ট্ৰাইবুনালের(এফটি)জন্য সদস্যদের বাছাই করেছে গৌহাটি হাইকোর্ট। এঁদের খুব শিগগিরই নিয়োগ করা হবে’। অতিরিক্ত এফটিগুলোতে কাজ শুরু হলে এধরনের ট্ৰাইবুনালের সংখ্যা বেড়ে ৩০০টিতে দাঁড়াবে। এনআরসি প্ৰকাশের পরবর্তী পর্যায়ে শান্তিশৃঙ্খলা অক্ষুণ্ণ রাখায় রাজ্যের জনগণের প্ৰশংসা করে তিনি বলেন,‘রাজ্যের ক্ষেত্ৰে এটা খুবই শুভ লক্ষণ’। এই সময়ে পুলিশ,আধা সামরিক বাহিনী সহ গোটা নিরাপত্তা বাহিনী যে ভূমিকা পালন করেছে তার জন্য তিনি তাদের তারিফ করেন।
গৃহ ও রাজনৈতিক বিভাগের পূর্ব সিদ্ধান্ত অনু্যায়ী কামরূপ মেট্ৰোতে ৬৭টি,নগাঁওয়ে ৩৯,যোরহাটে ৩১,তেজপুর ২১,শিলচর ২০,ধুবড়িতে ১০,কোকরাঝাড়ে ৭ এবং বঙাইগাঁওয়ে ৫টি ট্ৰাইবুনাল স্থাপনের কথা ছিল।
চূড়ান্ত এনআরসি প্ৰকাশের পর এফটিগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। চূড়ান্ত এনআরসিতে যে সব মানুষের নাম ওঠেনি তাদের ১২০ দিনের মধ্যে এফটিতে আবেদন জানাতে হবে। এই সব নাম ছুটদের নাম এফটিতে পাঠাতে প্ৰশাসনকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শুনানি ও প্ৰাসঙ্গিক নথিপত্ৰ অনুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখার পর এফটি সদস্যরা ওই ব্যক্তি ভারতীয় না বিদেশি সে ব্যাপারে চূড়ান্ত রায় দেবে।
বর্তমানে বিদেশি চিহ্নিতকরণে অসমে ১০০টি এফটি রয়েছে। অসম সরকার চূড়ান্ত এনআরসি প্ৰকাশের আগে রাজ্যে ১০০০টি এফটি স্থাপনের জন্য স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰকের কাছে আর্জি জানিয়েছিল। তবে স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰক রাজ্যে ৪০০টি এফটি স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে। প্ৰথম পর্যায়ে এধরনের ২০০টি এফটি স্থাপন করা হচ্ছে। বাকি এফটিগুলো স্থাপন করা হবে পরবর্তী পর্যায়।
২০১৯ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত মোট ২,০৭,৩১১টি মামলা এফটিতে ঝুলছে। ওদালগুরি-১ এফটিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৮,১১৯টি মামলা রয়েছে। চূড়ান্ত এনআরসি থেকে নাম বাদ পড়েছে মোট ১৯,০৬,৬৫৭ জনের।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ এনআরসি-র কাজে জড়ানো হয়েছে ৬২ হাজারের বেশি কর্মীকে
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: BJP (Assam Pradesh) Press Meet in Guwahati