ভুটানের বাড়তি জলে ভাসিয়ে দিয়েছে নিম্ন অসমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল

ভুটানের বাড়তি জলে ভাসিয়ে দিয়েছে নিম্ন অসমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল
Published on

গুয়াহাটিঃ ভুটানের কুরিশু জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্প থেকে ছাড়া বাড়তি জলে বৃহস্পতিবার পশ্চিম অসমের সাতটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে ঠেলে দিয়েছে। রাজ্যে চলতি মরশুমের বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে এপর্যন্ত ৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগে ভূমিস্খলনে মৃত্যু হয়েছিল দুজনের। ভু্টানের জলবিদ্যুৎ প্ৰকল্পের জলধারের বাড়তি জল ছেড়ে দেওয়ায় বরপেটা,নলবাড়ি,বাকসা,চিরাং,কোকরাঝাড়,ধুবড়ি এবং দক্ষিণ শালমারা জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ধুবড়ি জেলার গৌরীপুরে ১ জনের বন্যার জলে ডুবে মৃত্যু হয়। অসম রাজ্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে এখবর জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যের ১৮ জেলার ৬৭টি রাজস্ব সার্কলের ২৭৫৩ গ্ৰামের ক্ষতিগ্ৰস্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪,৯২,৭৩৪ জন। বন্যা কবলিত জেলাগুলি হচ্ছে ধেমাজি,দরং,বাকসা,নলবাড়ি,বরপেটা,চিরাং,বঙাইগাঁও,কোকরাঝাড়,ধুবড়ি,দক্ষিণ শালমারা,গোয়ালপাড়া,কামরূপ,কামরূপ(মেট্ৰো),মরিগাঁও,নগাঁও,গোলাঘাট,যোরহাট ও কাছাড়।

বর্তমানে বাকসা,নলবাড়ি,বরপেটা,চিরাং,বঙাইগাঁও,কোকরাঝাড়,ধুবড়ি,গোয়ালপাড়া,কামরূপ,মরিগাঁও,নগাঁও,গোলাঘাট এবং যোরহাট জেলায় ৮৩৩টি ত্ৰাণ শিবির কর্মক্ষম রয়েছে। এই শিবির সমূহে আশ্ৰয় নিয়ে আছেন ১,৯৫,১৫৯ জন। লখিমপুর,ওদালগুড়ি,দরং,বরপেটা,চিরাং,বঙাইগাঁও,কোকরাঝাড়,দক্ষিণ শালমারা,কামরূপ,মরিগাঁও এবং গোলাঘাটে ১০২টি ত্ৰাণ বণ্টন কেন্দ্ৰ কাজ করে চলেছে।

ব্ৰহ্মপুত্ৰ যোরহাটের নিমাতিঘাটে এবং ধুবড়িতে এখনও বিপদ চিহ্নের ওপর দিয়ে বইছে। জিয়া ভরলি শোণিতপুর জেলার এনটি রোড ক্ৰসিঙে পুঠিমারি কামরূপের এনটি ক্ৰসিঙে মানস,বরপেটা রোড ব্ৰিজে বেকি বইছে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে।

এনডিআরএফ,এসডিআরএফ অসামরিক প্ৰশাসন ও সেনাবাহিনী স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় এখনও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছে দরং,বাকসা,নলবাড়ি,বরপেটা,চিরাং,বঙাইগাঁও,কোকরাঝাড়,ধুবড়ি এবং মরিগাঁও ইত্যাদি জেলায়। বৃহস্পতিবার এই জেলাগুলির বন্যা কবলিত অঞ্চলে ৭৪টি নৌকো কাজে লাগানো হয় এবং ১০৭২ জনকে নিরাপদ আস্তানায় সরিয়ে নেওয়া হয়।

বন্যায় সর্বমোট ১৪০৪টি বাড়ির আংশিক হয়েছে। ৫৩৪টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ১,৩০,৩৮৩.৭০ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে জলে। ১৩টি বড় প্ৰাণী এবং ৩টি ছোট প্ৰাণী ভেসে গেছে বন্যায়। পুব অসম ডিভিশনের ডিএফও জানিয়েছেন,কাজিরঙা রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানে ১৭০ সেণ্টিমিটার জল হ্ৰাস পেয়েছে। তবে উদ্যানের ১৫টি শিবির এখনও রয়েছে জলের তলায়। ১৩ জুলাই থেকে এপর্যন্ত ২০৮টি বন্যপ্ৰাণীর মৃত্যু হওয়ার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। গত ২৪ জুলাই পবিতরায় একটি পুরুষ গন্ডারের শব উদ্ধার হয়েছে। ওদালগুড়ি,বাকসায় চলছে নদীর ভাঙন। বিভিন্ন জেলায় বাঁধের ক্ষতি হয়েছে প্ৰভূত। মরিগাঁও ও বঙাইগাঁও জেলায় বিভিন্ন পরিকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বরপেটায় কালভার্ট ও সেতু ভেসে গেছে। বরপেটায় চারটি স্কুল রয়েছে জলের নিচে।

logo
Sentinel Assam- Bengali
bengali.sentinelassam.com