গুয়াহাটিঃ রাজ্যে চূড়ান্ত নাগরিক পঞ্জি(এনআরসি)প্ৰকাশে হাতে আর মাত্ৰ একদিন বাকি। তবে রাজ্যের বাইরে থাকা অনির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ যারা এনআরসি সম্পর্কে ধারণা হীন,তাদের ব্যাপারে দিশপুরের হাতে কোন ক্লু নেই বলেই মনে হচ্ছে। এই সব মানুষের অধিকাংশই রাজ্যের স্থানীয় উপজাতি সম্প্ৰদায়ের। এনআরসিতে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য এই সব মানুষ আবেদন জানাননি,অজ্ঞতা অথবা অন্য কোনও কারণে। এদের সঠিক সংখ্যা কত তাও জানে না রাজ্য সরকার। এটাই সবকিছু নয়। এনআরসির চূড়ান্ত সম্পূর্ণ খসড়া থাকে নাম বাদ পড়ার পর তিন লক্ষেরও বেশি আবেদনকারী এনআরসিতে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য ফের আবেদন না জানানোর পথ বেছে নেন। সূত্ৰটির মতে,দিশপুর তিন লক্ষের বেশি আবেদনকারীর ব্যাপারে এনআরসি কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিল। কিন্তু এনআরসি কর্তৃপক্ষ আজ অবধি কোনও তালিকা সরকারকে দেয়নি। এই সমস্ত মানুষের ভাগ্যে আখেরে কী হবে রাজ্য সরকারের হাতে এসম্পর্কে কোনও ক্লু নেই।
তাই যারা এনআরসিতে নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন জানাননি এবং সম্পূর্ণ খসড়ায় নাম না ওঠার পর যে সমস্ত মানুষ নাগরিক পঞ্জিতে নাম অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়ে ফের আবেদন করেননি সেই সমস্ত মানুষের ক্ষেত্ৰে রুট ম্যাপ কী হবে তা নিয়ে প্ৰশ্ন উঠছে। তবে সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গিতে বিচার করে এটা আঁচ করা যাচ্ছে যে,এই সমস্ত মানুষদের এনআরসি ছুট অন্যান্যদের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হতে পারে। সেই হিসেবে আবেদন না জানানো এবং চূড়ান্ত খসড়া থেকে বাদ পড়া যে সমস্ত মানুষ ফের নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন জানাননি তাদের প্ৰত্যেককেই এখন একমাত্ৰ বিদেশি ট্ৰাইবুনালের(এফটি)দরজায় খটখটাতে হবে।
২০১৯-এর ১ সেপ্টেম্বর থেকে আরও একটা কঠিন বিষয় সামনে চলে আসবে,যখন লক্ষাধিক মানুষের পিঠে ‘ডি’ ভোটারের(সন্দেহভাজন ভোটার)তকমা সেঁটে যাবে। এই সব মানুষের অনেকেই সরকারি বিভাগ সহ বিভিন্ন প্ৰতিষ্ঠানে কাজ করছেন। এই সমস্ত মানুষের ছেলে-মেয়েরা রাজ্য ও রাজ্যের বাইরের বিভিন্ন শিক্ষা প্ৰতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছে। তাই পিঠে ‘ডি’ ট্যাগ বসলে তাদের সামাজিক মর্যাদা অর্থহীন হয়ে পড়বে এবং এর নেতিবাচক প্ৰভাব যে কী ভয়ঙ্কর হবে তার কোনও সীমা থাকবে না।
২০১৯-এর ১ সেপ্টেম্বর থেকে এনআরসি ছুট ব্যক্তিদের ৫৭টি বিদেশি ট্ৰাইবুনালের দরজায় গিয়ে লাইন দিতে হবে। এই এফটিগুলো তাদের মামলা সমূহ অন্যান্য নতুন এফটিতে সুপারিশ করবে। নতুন এফটিগুলোর সমস্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে নিদেন পক্ষে একমাস সময় লাগবে। সেপ্টেম্বরের প্ৰথম একপক্ষ কাল জুড়ে একটা হইচই পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। দেখা যাবে প্ৰচণ্ড ভিড়। কারণ এনআরসি ছুটরা বিদেশি ট্ৰাইবুনালে গিয়ে হত্যে দিয়ে পড়বেন। এখন বড় প্ৰশ্ন হলো-মানুষের ভিড় সামালাতে ওই ৫৭টি এফটিকে জনশক্তি ও অন্যান্য ক্ষেত্ৰে সুসজ্জিত করা হয়েছে কিনা? তাই এই বিষয়টি এখন সরকারের সামনে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ এনআরসি থেকে নাম ছুটদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা
অধিক খবরের জন্য ভিডিও দেখুন: In a tragic incident, two labourer electrocuted in Lumding on Monday evening.