গুয়াহাটিঃ কামরূপ(মেট্ৰো)জেলার পাঁচটি রাজস্ব চক্ৰের প্ৰায় দুশোটি পরিবার প্ৰচণ্ড ঝুঁকির মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন। যেকোনও সময় এই সব মানুষের জীবনে বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। চলতি বছরের এপ্ৰিল-মে মাসে এই সব পরিবারকে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার নোটিশ ইস্যু করা হয়েছিল। কারণ মানুষগুলো যে সব এলাকায় ঘর বেঁধেছেন,সেই স্থানগুলো ধস প্ৰবণ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো ওই নোটিশকে পাত্তাই দেননি।
নোটিশ অগ্ৰাহ্য করে পরিবারগুলো নিরাপত্তার অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও এলাকাগুলোতে আঁকড়ে বসে আছেন। কামরূপ মেট্ৰোর জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ(ডিডিএমএ)এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।
অপরিকল্পিত ও অবিজ্ঞানসম্মতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ এবং যথেচ্ছ মাটি কাটার ফলে পরিস্থিতি আরও বিগড়ে গেছে। ডিডিএমএ সূত্ৰটি মনে করে,ধস প্ৰবণ ওই সব এলাকায় ঘর বাঁধার ফলে ২০১৪ সালে ধস চাপা পড়ে ১৫ জন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। এরমধ্যে ২০১৪ তে পাঁচজন,২০১৬-তে ৬ জন,২০১৭-তে ১ জন,২০১৮-তে ৩ এবং ২০১৯-এ একজনের মৃত্যু হয়।
গুয়াহাটিতে ভূমিস্খলন ফি বছরের সমস্যা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্ৰণের বাইরে চলে যাওয়ার পরই এএসডিএমএ ২০১৫ সালে গুয়াহাটি মেট্ৰো জেলায় ধস প্ৰবণ এলাকাগুলো সম্পর্কে একটা মানচিত্ৰ প্ৰস্তুত করার জন্য জরিপ চালাতে আসাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে দায়িত্ব দেয়। ওই সমীক্ষায় যে তথ্য পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে গুয়াহাটি মহানগরীর ১৯ পাহাড়ি স্থানে ৩৬৬টি ধস প্ৰবণ এলাকা রয়েছে।
এই সব ধস প্ৰবণ এলাকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে চুনশালির ৭৭টি এলাকা,৪০টি নুনমাটি এলাকায়,খারঘুলি এলাকায় ৩৭টি,খানাপাড়া এলাকায় ৩৩টি,৩১টি নারেঙ্গিতে,৩০টি হেঙেরাবাড়ি এলাকায়,২৫টি কাহিলিপাড়া এলাকায়,শান্তিপুর এলাকায় ২০টি,১৪টি নরকাসুর এলাকায়,গড়ভাঙা এলাকায়৯টি,মালিগাঁওয়ে ৯,কালাপাহাড় এলাকায় ৭টি,গোটানগর ও নবগ্ৰহ এলাকায় ৬টি করে ফাটাশিল,কামাখ্যা/নীলাচল,শরনিয়া এবং কইনাধরায় ৫টি করে,জালুকবাড়ি,লঙ্কেশ্বর এলাকায় ২টি করে এবং শুক্ৰেশ্বর এলাকায় ১টি।
ওই সময় থেকেই ধস প্ৰবণ এলাকাগুলোতে বসবাসকারী লোকেদের নোটিশ ইস্যু করে আসা হচ্ছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলো আজ অবধি অবজ্ঞা করে চলেছে ওই নোটিশের। জেলা দুর্যোগ প্ৰশমন বিভাগ(ডিডিএমএ)কামরূপ(মেট্ৰো)এএসডিএমএ-র সহযোগিতায় গত ১৫ জুলাই থেকে শহরের পাহাড় এলাকায় বসবাসকারী প্ৰায় ৯০০০ পরিবারের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য অভিযান শুরু করেছে।
এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কামরূপের(মেট্ৰো)জেলাশাসক বিশ্বজিৎ পেগু বলেন,লখরায় সম্প্ৰতি ভূমিস্খলনের পর কিছু লোক নিরাপদ আস্তানায় চলে গেছেন। যদি ওই এলাকার বাকি মানুষ চান তাহলে আমরা তাদের জন্য ত্ৰাণ শিবিরের ব্যবস্থা করতে পারি। কিন্তু তাই বলে তাঁদের ওই এলাকা ছাড়ার জন্য আমরা জোর খাটাতে পারি না। জীবন ও সম্পত্তি বাঁচানোর জন্য আমরা তাদের নিরাপদ আস্তানায় সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানাতে পারি-বলেন পেগু।
অন্যান্য খবরের জন্য পড়ুনঃ অসমে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭,জল কমছে,স্বাভাবিক অবস্থা এখনও ফিরেনি